ভীতি দূর করে বাড়াতে হবে করের আওতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৯ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০১৭

ভীতি দূর করে করদাতাদের করের আওতা বাড়াতে হবে। শুধু শহরে নয়, গ্রামেও করের কার্যক্রম বাড়াতে হবে। এ জন্য রাজস্ব কর্মকর্তাদের আরও সৌহার্দ্যপূর্ণ হতে হবে। যেভাবে আয়কর মেলায় কর্মকর্তারা সেবা দিয়ে থাকেন, সেভাবে সারা বছর সেবা দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে এনবিআর আয়োজিত প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সম্পাদক, প্রকাশক ও মালিকদের সঙ্গে আয়কর মেলা-২০১৭ পরবর্তী এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বণিক বার্তার সম্পাদক হানিফ মাহমুদ, জাগো নিউজের সম্পাদক সুজন মাহমুদ ও শেয়ার বিজের সম্পাদক মীর মনিরুজ্জামান।

এ সময় কর অফিসে মেলার পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আয়কর মেলা শেষ হয়েছে। কর অফিসে যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো কর মেলায় থাকে না। তাই করদাতারা মেলায় কর দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আমি এনবিআরকে বলবো কর মেলার মতো প্রতিটি কর অফিসে ঝামেলাবিহীন পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

তিনি বলেন, করদাতাদের কিছু সুবিধা দিতে হবে। বিদেশে যেটা দেয়া হয়। এখন ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড দেয়া হচ্ছে; এটা করদাতাদের উৎসাহিত করবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো এটাও সংগ্রহ করতে হবে। প্রথম মোবাইল যখন দেশে আসে তখন মোবাইল সঙ্গে থাকলে অনেকে সম্মানিতবোধ করতেন। ঠিক তেমনি এখন ‘ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড’ সঙ্গে থাকার কারণে অনেকে সম্মানিতবোধ করছেন।

ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, কর মেলা এখন বাৎসরিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমাদের কর না দেয়ার যে সংস্কৃতি ছিল সেটা পরিবর্তন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ‘আমরা কর দেবো স্বাবলম্বি হবো’। কর প্রদান না করলে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে না। আমাদের করের টাকাতেই পদ্মাসেতু তৈরি হচ্ছে।

মিডিয়ার সঙ্গে এনবিআরের সম্পর্ক অত্যন্ত বন্ধুসুলভ জানিয়ে তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আমরা নিজেরাও কর দেবো এবং অন্যকে কর দিতে উৎসাহিত করবো। কর দেয়ার সুবিধা প্রচার করবো।

ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমরা দেখেছি কর নিয়ে মানুষের মধ্য একটা ভীতি ছিল। এখন সেটা কমে আসছে। এনবিআর এখন করবান্ধব হওয়ার চেষ্টা করছে। এটা ইতিবাচক দিক।

মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, কর দেয়ার সংস্কৃতি গ্রামেও নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া করের আওতা বাড়ানো নিয়ে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেগুলো আশাব্যঞ্জক।

তিনি বলেন, মিডিয়া কর বাড়ানোর বিষয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। এনবিআরের উচিত মিডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও বাড়ানো।

শুভচ্ছা বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, মিডিয়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ স্টক হোল্ডার। তারা আমাদের কার্মকাণ্ড জনসম্মুখে তুলে ধরছে। কর দেয়া এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে। করদাতাদের আমরা ট্যাক্স কার্ড প্রদান করছি।

এনবিআরের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কর মেলার সেবা যেন প্রতিটি কর অফিসে থাকে, সেজন্য ১২ নভেম্বর থেকে প্রতিটি কর অফিসে বিকেন্দ্রীকরণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর থেকে সপ্তাহব্যাপি আয়কর মেলায় সারা দেশে রাজস্ব আদায় হয়েছে দুই হাজার ২১৭ কোটি ৩৩ লাখ ১৪ হাজার ২২১ টাকা। যা গত বছর ছিল দুই হাজার ১২৩ কোটি ৬৭ লাখ ৭৫ হাজার ৮১১ টাকা। অর্থাৎ এ বছর আয়করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ।

এমএ/এআরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।