রাইটের অর্থ অব্যবহৃত রেখেই বোনাস শেয়ার দিচ্ছে জিপিএইচ
রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থের সিংহভাগ অব্যবহৃত রেখেই বোনাস শেয়ার ছেড়ে মূলধন বাড়াতে যাচ্ছে জিপিএইচ ইস্পাত। অথচ মুনাফার বড় অংশ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরণ না করে রিজার্ভে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ।
কোম্পানিটির রাইটের অর্থ অব্যহৃত রেখে বোনাস শেয়ার ঘোষণা এবং রিজার্ভ বাড়ানোর এ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, ব্যবসায় সম্প্রসারণের লক্ষ্যে জিপিএইচ ইস্পাত রাইট শেয়ার ইস্যু করে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করে। উত্তোলিত অর্থ অব্যবহৃত থাকার মানে কোম্পানিটি সঠিকভাবে উত্তোলিত অর্থ ব্যবহার করতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে বোনাস শেয়ার ছেড়ে আবার অর্থ উত্তোলনের কোনো যৌতিকতা নেই।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জিপিএইচ ইস্পাত ২০১৬ সালের ১ জুন রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ২৬১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে এখনও ২২১ কোটি ৩২ লাখ বা ৮৪ শতাংশ টাকা অব্যবহৃত রয়েছে। যা সম্পূর্ণ ব্যবহার করতে ২০১৮ সালের ৩১ মে পর্যন্ত সময় লাগবে বলে রাইট অফার ডকুমেন্টসে উল্লেখ করা হয়েছিল।
তবে এই সময়ের মধ্য রাইটের অর্থ ব্যবহার করতে পারবে না বলে ২৩ অক্টোবর আরও এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের মুনাফা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিতরণ না করে, বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিপিএইচ ইস্পাতের পরিচালনা পর্ষদ।
কোম্পানিটির ২০১৬-১৭ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৮৩ পয়সা হিসাবে ৫৭ কোটি ৭ লাখ টাকা মুনাফা হয়েছে। এর বিপরীতে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ১০ শতাংশ (৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার) লভ্যাংশ করেছে। এরমধ্যে ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার বোনাস শেয়ার দিয়ে মূলধন বাড়ানো হবে।
এদিকে কোম্পানিটি মুনাফার ৫৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে বাকি প্রতিটি শেয়ারে ৮৩ পয়সা বা ৪৫ শতাংশ রিজার্ভে যোগ হবে। যার পরিমাণ হবে ২৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. বখতিয়ার হাসান বলেন, সাধারণত ব্যবসায় সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কোম্পানিগুলো বোনাস শেয়ার দিয়ে থাকে। কিন্তু ব্যবসায় সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রাইটের মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ এখনও ব্যবহার করতে পারেনি জিপিএইচ ইস্পাত। এ পরস্থিতিতে লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার পেছনে কোম্পানিটির উদ্দেশ্য কী তা পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে ক্ষতিয়ে দেখা উচিত।
এমএএস/বিএ