মোবাইলে শেয়ার কেনাবেচা সেপ্টেম্বরের আগে নয়
পিছিয়ে গেছে মোবাইল ফোনে শেয়ার কেনাবেচার প্রকল্প। চলতি জুনে মধ্যে নতুন এই সুবিধা চালুর কথা থাকলেও সেপ্টেম্বরের আগে তা আর চালু হচ্ছে না। ফলে আরো তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে বিনিয়োগকারীদের।
তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বলছে, কোনো ঝামেলা ছাড়া নির্বিঘ্নে মোবাইলে লেনদেন নিশ্চিত করতে একটু সময় নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সেবাটি চালু হলে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের স্মার্টফোন ব্যবহার করে নিজেই শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। এছাড়া নিজের পোর্টফোলিওর অবস্থা জানতে এবং বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদর পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এমনকি পছন্দের শেয়ার ক্রয়ের মনস্থির করলে যে দরে শেয়ারটি কিনতে চান তা নির্ধারণ করে দিলে নির্দিষ্ট ওই দরে শেয়ারদর উঠলে স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ট বার্তাও পাওয়া যাবে।
একইভাবে বিক্রির সময় দর নির্ধারণ করে দিলে শেয়ারটির বাজার মূল্য ওই মূল্যে পৌছাতেই বার্তা পেয়ে যাবেন বিনিয়োগকারী।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শেয়ার লেনদেনের লক্ষ্যে নতুন মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপ করেছে ডিএসই। চলতি বছরের এপ্রিলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক লেনদেন কার্যক্রম শুরু করাও হয়েছে। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এরই মধ্যেই এটি চালু করেছে।
এদিকে ডিএসই থেকে বারবার জানানো হয়েছিল জুনের মধ্যে এ সুবিধা পুরোপুরি চালু করা যাবে। কিন্তু জুনের তৃতীয় সপ্তাহেও সেবাটি চালু হয়নি।
এ বিষয়ে ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচাল শাকিল রিজভী জাগো নিউকে বলেন, চলতি বছরের জুনের মধ্যে সেবাটি চালুর কথা থাকলেও তা সেপ্টেম্বরের আগে হচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সম্প্রতি ডিএসইর ট্রেডিং সফটওয়্যার সমস্যার কারণে দুই দিন সময়মত শেয়ার লেনদেন শুরু করতে পারেনি। ভবিষ্যতে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা স্মার্ট ফোনে লেনদেনে সেবাটি নির্বিঘ্নে পেতে পরে সেই জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে করে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো রকম কারিগরি ত্রুটি না হয়।
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ গত জানুয়ারিতে বিশ্বখ্যাত নাসডাক স্টক এক্সচেঞ্জের সহযোগী আইপি কোম্পানি নাসডাক ওএমএক্স এবং অপর এক বিশ্বখ্যাত কোম্পানি ফ্লেক্সট্রেড থেকে শেয়ার কেনাবেচার আধুনিক ট্রেডিং প্লাটফর্ম কিনেছে। ইন্টারনেট ভিত্তিক এ ট্রেডিং প্লাটফর্মে ডেস্কটপ ছাড়াও মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমেও শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ রয়েছে। ডিএসই সে সুবিধাটিই নিতে যাচ্ছে।
ডিএসইর কর্মকর্তারা জানান, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ নিতে হলে বিনিয়োগকারীকে নির্দিষ্ট অঙ্কের মাসিক ভিত্তিতে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। আর নিজ নিজ ব্রোকারেজ হাউস থেকে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া যারা একাধিক বিও হিসাব পরিচালনা করেন, তাদের প্রতিটি বিও হিসাবের জন্য পৃথক ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড নিতে হবে।
এদিকে ডিএসইতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগটি নতুন হলেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ইতিমধ্যে এ সুবিধা চালু করেছে। তবে দেশের স্টক এক্সচেঞ্জের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচা তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি।
সিএসইর মোবাইল ট্রেড অ্যাপের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার অর্ডার প্লেস করা ছাড়াও নিজস্ব পোর্টফোলিও দেখা যায়। বিও হিসাবে কত টাকা জমা আছে তাও জানা যাচ্ছে। এ ছাড়া মার্কেটের শেয়ার লেনদেন পর্যবেক্ষণের জন্য একটি পাতায় সবগুলো শেয়ারের সর্বশেষ বাজারদর, বেস্ট আস্ক এবং বেস্ট বিড প্রাইস দেখা যায়। আবার পৃথকভাবে নির্দিষ্ট শেয়ারের ১০টি বেস্ট আস্ক ও বিড প্রাইস দেখার সুযোগ রয়েছে। এতে ওই শেয়ারের দিনের সর্বশেষ বাজারদর, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দর প্রদর্শিত হয়। এমনকি সপ্তাহের ও বছরেরও সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দর জানা যায়। এ কথায় ডেস্কটপ কম্পিউটারে প্রদর্শিত সব তথ্য এ মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে জানা যায়।
এসআই/আরএস/পিআর