কমেছে সবজির দাম, বেড়েছে মুরগির
রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। কয়েক মাস ধরে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া কিছু সবজি এখন ৪০ টাকায়ও মিলছে। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও পেঁয়াজের। গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা এবং পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা বেড়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ চৌধুরী পাড়া এবং খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পটল, ঝিঙা, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, বেগুনসহ প্রায় সবকটি সবজির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। তবে দুই দিন ধরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, এ ধারা অব্যহত থাকলে আবার সবজির দাম বাড়তে পারে।
তারা বলছেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। কিছু কিছু শীতকালীল সবজি বাজারে এসেছে। তবে পুরোপুরি সব সবজি এখনও বাজারে আসেনি। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম অনেকটাই কমে যাবে।
এ দিকে বেশিরভাগ সবজির দাম কমলেও বাড়ার তালিকায় নতুন করে স্থান করে নিয়েছে ব্রয়লার মুরগি, পেঁয়াজ, শিম ও টমেটো।
রামপুরা অঞ্চলের বাজারগুলোতে সাদা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। অর্থাৎ ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।
আর লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। সে হিসাবে লাল লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা।
বাজার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
প্রতি কেজি টমেটা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা। ৮০ টাকা কেজি শিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগির সঙ্গে দাম বাড়ার পালে কিছুটা হাওয়া লেগেছে গরুর মাংসেও। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫১০ টাকা থেকে ৫২০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০০ টাকা কেজি। তবে আগের মতোই স্থির আছে খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়।
দাম কমার তালিকায় থাকা সবজির মধ্যে প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। আগের সপ্তাহে এ সবজিটির দাম ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। করলার দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
ধুন্দল ও ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহে এ সবজি দুটির দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। বেগুন ও ঢেঁড়স আগের সপ্তাহের মতোই ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আগের সপ্তাহের মতোই কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। ডিমের দামও রয়েছে অপরিবর্তিত। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা দরে।
রামপুরা বৌ-বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আব্দুর রহিম বলেন, প্রায় সব সবজির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। সামনে দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দুই দিন ধরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এমন বৃষ্টি চলতে থাকলে দাম না কমে আবার সব সবজির দাম বেড়ে যাবে।
খিলগাঁও বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আল-আমিন বলেন, পটল, ঝিঙা, করলার দাম কিছুটা কমেছে। তবে শিম, টমেটা ও লাউ’র দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে যে শিম ৮০ টাকায় বিক্রি করেছি আজ তা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর ১০০ টাকার টমেটো বিক্রি করছি ১২০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা লাউ আজ বিক্রি করতে হচ্ছে ৬০ টাকা পিস দরে।
এই ব্যবসায়ী আরো বলেন, শীতকালীন কিছু সবজি বাজারে এসেছে, এটা সত্য। তবে এসব সবজির দাম বেশ চড়া। সাধারণত বাজারে যখন যে সবজি নতুন আসে তার দাম একটু বেশিই থাকে। সরবরাহ বাড়লে দাম এমনিই কমে যাবে। এখন যে শিম ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করছি, এক সময় এই শিমের দাম শুধু ২০ টাকা হয়ে যাবে।
এমএএস/এআরএস/এমএস