মরিচের ঝালে দিশেহারা ক্রেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১০ এএম, ০৫ অক্টোবর ২০১৭

চালের দাম নিয়ে অস্বস্তি না কাটতেই এবার বাড়তি কাঁচা মরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ এখন ২৫০-২৬০ টাকায়। বিক্রেতারা বন্যা ও আমদানির দোহায় দিলেও দিশেহারা ক্রেতারা। একই সঙ্গে গুজব ছড়িয়ে বাড়তি দাম নেয়ার অভিযোগ তাদের।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একশ’ গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। অর্থাৎ এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম দাঁড়ায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। যেখানে গত সপ্তাহেও একশ' গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ১২ থেকে ১৫ টাকায়।

রাজধানীর মিরপুরে কাঁচা বাজার করতে আসা গৃহীনী মাসুমা বেগম বলেন, বাজারে কোনো কিছুরই দাম কম না। এখন কাঁচা মরিচের দিকে তো তাকানোই যায় না। কিন্তু বাসায় নানা পদের রান্নায় কাঁচা মরিচ লাগেই।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমার সাহেবের তো আয় বাড়েনি। জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে। এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও কিছু করার
নাই।

ওই বাজারের কাঁচা সবজি বিক্রেতা আরিফ জানান, পাইকারি বাজারে বাড়লে তার প্রভাব খুচরা বাজারেও পরে। বর্তমানে দ্বিগুণের বেশি দাম দিয়ে পাইকারি বাজার থেকে মরিচ আনতে হচ্ছে। গত সপ্তাহে যে মাল বাজারে ছিল সহজলভ্য, এখন তা কমে গেছে।

বাজারের অপর বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি কমেছে। এখন ২৫০ গ্রাম মরিচ ৬০ টাকার (কেজি ২৪০ টাকা) নিচে বিক্রি করলে লোকসান দিতে হবে। পাইকারি বাজার থেকে এক পাল্লা (৫ কেজি) মরিচ ১ হাজার ১০০ টাকায় কিনেছি। এরপর যাতায়াত ভাড়া আছে। কেনা দামই পড়েছে কেজি ২২০ টাকা। অন্যান্য খরচ যোগ করলে এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়।

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর পাইকারি আড়তে ৫ কেজি কাঁচা মরিচ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে কিছুটা কমে ৯৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এক ব্যবসায়ী।

আড়তদার করিম আলী বলেন, বন্যার পরে ভারত থেকে আমদানি করা মরিচ বেশি বিক্রি হয়েছে। পূজার ছুটিতে গত এক সপ্তাহ ধরে মরিচ আসেনি। এখনও বাজারে তেমন মরিচ নেই। অন্যদিকে দেশে বন্যার কারণে মরিচ উৎপাদন আগেই কমেছে। ফলে বাজারে দেশি মরিচের সরবরাহ কম। এ কারণে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। তবে আমদানি করা মরিচের সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দাম আবারও কমবে।

পাইকারি বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা বলেন, আশুরা ও দুর্গোৎসব ঘিরে টানা ছুটিতে আমদানির মরিচ ছিল না। তাছাড়া গত তিনদিনের বর্ষণে সরবরাহ সংকট সৃষ্টি
হয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যে পরিমাণ কাঁচা মরিচ এসেছে তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। সরবরাহে ঘাটতির কারণে কাঁচা মরিচের দামে এ পরিস্থিতি।

এদিকে সরবরাহ সংকটের কথা বলা হলেও রাজধানীর বাজারগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ কাঁচা মরিচ দেখা গেছে। তবে দাম বেশি থাকায় মরিচের বেচাকেনা কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে মরিচের উৎপাদন কমেছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে ১ লাখ ৭৬ হাজার টন মরিচ উৎপাদন হয়েছে। বর্তমানে তা কমে এক লাখ টনের নিচে নেমে এসেছে। এ কারণে আমদানি নির্ভরতা বাড়াছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

এমএ/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।