কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ দুর্বলতায় ঝুঁকিতে আর্থিক খাত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৮ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পর্ষদ সদস্যদের স্বেচ্ছাচারিতা, অব্যবস্থাপনা আর অদক্ষতার কারণে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে ব্যাংকিং খাতে।

একই সঙ্গে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে বাড়ছে এ খাতে মন্দ ঋণের পরিমাণ। এসব নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে আর্থিক খাতে ঝুঁকি বাড়ছে।

জেনেভাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) প্রকাশিত ‘গ্লোবাল কম্পিটিভনেস রিপোর্ট ২০১৭-১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ডব্লিউইএফ’র পক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫১ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করেন ২০১৬ সালে ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন কমানো হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রকাশকালে সিপিডির পক্ষে বলা হয়, দেশে বেশকিছু সূচকের উন্নতি হলেও আর্থিক খাতের তেমন অগ্রগতি হয়নি। বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বড় আকারের মন্দ ঋণ আদায় হচ্ছে না। ব্যাংকের বোর্ডকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। বড় বড় কোম্পানির কাছে ঋণ কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। টেকসই উন্নয়নের করতে হলে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আর্থিক খাতেরও শৃঙ্খলা আনতে হবে। আর্থিক খাতে বাংলাদেশ একধাপ উন্নতি হয়ে ৯৮তম স্থানে অবস্থান করছে। তবে এতে আশানুরূপ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ একসময় আর্থিক খাতে শৃঙ্খলার দিক থেকে আমাদের অবস্থান ৭০ এর নিচে ছিল।

দেশের আর্থিক খাত একটি জায়গায় এসে আটকে গেছে উল্লেখ করে সিপিডি জানায়, এজন্য ব্যবস্থাপনা নীতি ও এখাতের স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে উন্নতি করতে হবে।

২০১৬ সালে বিদ্যুৎ, রেল, সড়কসহ বেশকিছু খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু নৌবন্দরে তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে পণ্য আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগছে। তাই নৌবন্দরের উন্নয়ন জরুরি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানবসম্পদ উন্নয়নে তেমন অগ্রগতি হয়নি। শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়লেও প্রাথমিক খাতে তেমন উন্নতি হয়নি। একই সঙ্গে ব্যবসায় শিক্ষা, গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞাতা কম বলে জানানো হয়। এছাড়া অনলাইনে অর্থ আয়ের সক্ষমতাও কম।

এ সময় বৈশিক পর্যায়ে অর্থনীতিকে নিতে হলে আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, উচ্চশিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে দক্ষতা বাড়ানোসহ শ্রমবাজারের উন্নয়ন প্রয়োজন। বর্তমানে বৈষয়িক ব্যবসায় ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকি জঙ্গি ও সাইবার অ্যাটাক। এ বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে হবে।

প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এ সময় সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনসহ সংস্থার অন্য গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

এসআই/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।