সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় চালের দাম বেড়েছে : বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৪৯ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পর পর দুটি বড় বন্যা ও সরকারর সিদ্ধান্তহীনতার কারণে চালের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্ব অর্থনীতির সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্ধ-বার্ষিক প্রতিবেদন ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস’ প্রকাশকালে এ কথা বলেন বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। বুধবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, সরকারি যে সব সিদ্ধান্ত তা বাস্তবায়নে সময় নেওয়া হয়েছে। শুল্ক কমানো হলে সে অর্ডার বন্দরে পৌঁছতে সময় লেগেছে। ফলে সরকারের কাছে চালের মজুদ না থাকায় ব্যবসায়ী তথা বাজার সুবিধা নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এ বছর বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির বিষয়েও ধারণা দেয় বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি ) প্রবৃদ্ধিরও পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশি, ভালো এবং সবার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য মূল চ্যালেঞ্জ। সংস্থাটি বলছে, সাম্প্রতিকালে কর্মসংস্থান সৃষ্টির গতি কমে গেছে। এর পেছনে অবকাঠামোগত দুর্বলতা, আর্থিকখাতের সংস্কার না হওয়া ও ইনফরমাল লেবার মার্কেটের আধিপত্য বড় কারণ।

আন্তর্জাতিক এ ঋণদাতা সংস্থা বলছে, বাংলাদেশ সরকার এ বছর ৭. ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির যে আশার কথা শুনিয়েছে, তা অর্জন করতে হলে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেসরকারি খাতে ‘প্রচুর বিনিয়োগ’ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। তা করতে না পারলে আগামী অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি হবে না।

অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) গতকাল তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০১৭’-এ বলেছে, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। যা বিশ্ব ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি ধারণার চেয়ে দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।

অনুষ্ঠান অন্যদের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মেহরীন এ মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. জাহিদ বলেন, বন্যার কারণে ২০ লক্ষ টন চালের ক্ষতি হয়েছে। তার উপর মিল মালিকরা মজুদ করে রাখে যদিও এটা প্রমাণ করা কঠিন। অনেক সময় সরকারি সিদ্ধান্তের বিলম্বেও চালের দাম বাড়তে দেখা যায়। কোন দেশ থেকে কি পদ্ধতিতে চাল আমদানি করবে সে সিদ্ধান্ত নিতেই দেরি হয়ে যায়। আমদানি শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েও বাস্তবায়নে বিলম্বের ফলে শুল্ক কমার আসায় চাল নিয়ে অনেক ট্রাক সিমান্তে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে চালের দাম বেড়ে যায়।

জাহিদ বলেন, কয়েকদিন আগে ভারত থেকে চাল আসাছে না এমন গুজব ছড়ানো হয়। দোখা যায় এর পরই এক ধাপ চালের দাম আবারও বাড়ে।

চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের কাছে পর্যপ্ত মজুদ রাখার প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু চুক্তি আর চাল আসছে চাল আসছে বললেই তো দাম কমবে না। এর জন্য প্রয়োজন গুদামে পর্যপ্ত চাল থাকা। পর্যপ্ত চাল না থাকলে ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিভাবে এ সুযোগ নেয়, দাম বাড়িয়ে দেয়।

এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে সেখানে স্থানীয়ভাবে মূল্যস্ফিতি বাড়বে। জাতীয়ভাবে এর প্রভাব কি পড়বে সেটা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা মনে করি এর প্রভাব মূল্যস্ফিতিতে জাতীয়ভাবে পড়বে না।

একে/এমএস/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।