প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে অর্থবিল : ডিসিসিআই
দেশবাসী ও ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে সংশোধিত যে অর্থবিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে তা প্রবৃদ্ধি অর্জন সহায়ক হবে বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। একই সঙ্গে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন ও বর্ধিত আবগারি শুল্ক থেকে সরে আসাকে ইতিবাচক মনে করছে ঢাকা চেম্বার।
বৃহস্পতিবার পাসকৃত অর্থবিল ২০১৭-১৮ বিষয়ে ঢাকা চেম্বারের এক প্রতিক্রিয়া এ কথা জানানো হয়।
ঢাকা চেম্বার মনে করে, উন্নয়ন সহায়ক সংশোধনী আনায়নের ফলে পাসকৃত অর্থবিলটি দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগকে বেগবান করবে।
এর আগে গত ১ জুন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করা হয়েছিল, যেখানে বিদ্যমান প্যাকেজ ভ্যাট ব্যবস্থার পরিবর্তে সব পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংকে জমাকৃত টাকার ওপর আবগারি শুল্ক প্রায় ৬০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব এবং এ সিদ্ধান্ত সমাজের উচ্চ, মধ্য এবং নিম্নবিত্তের মানুষের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সমাজে হতাশা তৈরি করে। পাসকৃত অর্থবিলে বিদ্যমান মূসক আইনকে আরও দুই বছরের জন্য বলবৎ রাখার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানায়।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ২০টি সেবা খাত স্তরভিত্তিক মূসক সুবিধার আওতায় রয়েছে এবং ১৭৯টি পণ্য ট্যারিফ ভ্যালু সুবিধার আওতায় রয়েছে। বিদ্যমান ভ্যাট আইন বহালের ফলে নির্মাণ সামগ্রী, বিস্কুট, জুস, মশলা, পরিবহন, অ্যাপার্টমেন্ট, আসবাবপত্র, তথ্য-প্রযুক্তি সেবা, বিদ্যুৎ এবং রেস্তোরা প্রভৃতি খাতের দাম বাড়বে না। পাশাপাশি ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক হ্রাস করায় দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত আয়ের জনগণ সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ হবে এবং এসএমই খাত মূলধন সংগঠনে আস্থা ফিরে পাবে, যা কিনা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হারে জিডিপি অর্জনে সহায়তা করবে।
এছাড়াও পাসকৃত অর্থবিলে করর্পোরেট করের হার অপরিবর্তিত রাখায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাসের পাশাপাশি পণ্যের বহুমুখীকরণ কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশংকা রয়েছে। যদিও তৈরি পোশাক খাতে কর্পোরেট করের হার ১৫ শতাংশের স্থলে ১২ শতাংশ নির্ধারণ এবং পরিবেশবান্ধব পোষাক তৈরি কারখানার ক্ষেত্রে কর্পোরেট করের হার ১৪ শতাংশের স্থলে ১০ শতাংশ করায় উক্ত খাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে এবং ৫০ বিলিয়ন রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে।
দেশে সংযোজিত মোটরসাইকেলের ওপর থেকে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা চেম্বার বলছে, এতে ওই খাতের স্থানীয় উদ্যোক্তারা আরও উৎসাহিত এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া দেশে সংযোজিত রেফ্রিজারেটর শিল্পের ওপর থেকে সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করায় আমদানি বিকল্প এ শিল্পটিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে সোলার প্যানেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হলেও পাসকৃত অর্থবিলে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের প্রবণতাকে উৎসাহিতের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে।
এসআই/এএইচ/জেআইএম