চট্টগ্রামে অস্থির চালের বাজার


প্রকাশিত: ০১:২৪ পিএম, ১৬ মে ২০১৫

চাল আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে সরকারের এমন ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামের  চালের বৃহৎ পাইকারি বাজার চাকতাইয়ে অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। শুল্ক আরোপ ঘোষণার কয়েকদিনের মধ্যেই বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। দেশে ভোগ্যপণ্যের প্রধান পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের চাকতাইয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় চালের বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে।

ভারতীয় বেতি চাল কয়েকদিন আগে ৫০ কেজির একটি বস্তা এক হাজার ২২০ টাকা দরে বিক্রি হলেও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৪০০ টাকায়। এর চেয়ে মানে একটু ভালো একই চাল কয়েকদিন আগে এক হাজার ২৫০ টাকা বিক্রি হলেও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৪৫০ টাকা। চালের দাম আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

মজুদ চাল বেশি দামে বিক্রির আশায় অধিকাংশ আড়তেই চালের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাধারাণ ভোক্তারা। তারা বলছেন, চালের দাম বাড়তে পারে এমন আশঙ্কায় মজুদ বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।

চাকতাইয়ের চালপট্টির রাঙ্গুনিয়া অটোরাইচ মিলের মালিক আবদুর রহমান জানান, ভারত থেকে চাল আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েক মাস ধরে দেশীয় চালের বাজার মন্দা ছিল। আমদানিতে শুল্ক আরোপের ফলে হঠাৎ করেই দাম বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, হঠাৎ করেই এক লাফে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দাম বৃদ্ধি পাওয়াটা অস্বাভাবিক। এভাবে চালের দাম বাড়লে আসন্ন রমজানের মৌসুমে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।

চাল আড়ৎদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাল আমদানিতে শুল্ক আরোপ ঘোষণার পর থেকেই মূলত চালের দাম বাড়তে শুরু করে। পাইকারি বাজারে গত শনিবারও চালের দাম নিম্নমুখী ছিল। কিন্তু রোববার থেকেই দাম বাড়তে থাকে।

এর মধ্যে ভারতীয় আতপ বেতি চালের দাম ৫০ কেজির বস্তা প্রতি প্রায় ১৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪২০ টাকায়। দেশি বেতি আতপ (নতুন) চালের দাম বস্তাপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪৬০ থেকে ৭০ টাকা। পুরাতন জিরাশাইল ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৫০ টাকা, নতুন জিরাশাইল ৫০ টাকা বেড়ে এক হাজার ৯৫০, মিনিকেট আতপ ১০০ টাকা বেড়ে এক হাজার ৯৫০, দেশি পারি সিদ্ধ ১৫০ টাকা বেড়ে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে আমদানি করা চালের ওপর ১০ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত মোটেও সঠিক হয়নি বলে জানালেন চাকতাই চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম।

তিনি বলেন, সরকার কৃষকের লাভের কথা চিন্তা করে আমদানি চালে শুল্কারোপ করলেও কৃষকরা লাভবান হবেন না। কারণ তাদের উৎপাদিত ধান এরই মধ্যে মিল মালিকরা কিনে নিয়েছেন। ফলে এ মুহূর্তে চালের দাম বাড়লে মিল মালিকরাই লাভবান হবেন। গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর কথা শুনে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হয়নি।

প্রসঙ্গত, কৃষককে ধানের ন্যায্য দাম দিতে গত রোববার (১০ মে) চাল আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের এ সিদ্ধান্ত ওই দিন থেকেই কার্যকর বলে ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

চৌধুরী লোকমান/এসকেডি/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।