ঈদকে সামনে রেখে বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ


প্রকাশিত: ০২:৫৩ পিএম, ০৪ জুন ২০১৭

ঈদকে সামনে রেখে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার আগের মাসেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। সদ্যসমাপ্ত মে মাসে প্রবাসীরা ১২৬ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের মাসের চেয়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে চলতি (২০১৬-১৭) অর্থবছরের এখন পর্যন্ত একক মাস হিসেবে মে`তে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে প্রবাসীরা ১২৬ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। আর তা হলো চলতি (২০১৬-১৭) অর্থবছরের মধ্যে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স আহরণ। এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ২৬ লাখ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ১৭ কোটি মার্কিন ডলার বা সাড়ে ১৫ শতাংশ। ঈদকে সামনে রেখে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, ঈদের আগে মানুষের খরচ বেড়ে যায়। এ সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপনের লক্ষ্যে বেশি অর্থ পাঠান বিদেশিরা। এতে রেমিট্যান্সের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে।

রেমিট্যান্সের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত চার বছরের মধ্যে দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। এ সময় রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। গত অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছর শেষ হতে আরও এক মাস বাকি থাকলেও ১১ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ১৫৫ কোটি ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার।

চলতি বছরের গেলো ১১ মাসের মধ্যে গত জুলাই মাসে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার, পরের মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১৮ কোটি ৩৬ লাখ মার্কিন ডলার। তবে এর পরের মাস অর্থাৎ গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে টানা তিন মাস রেমিট্যান্স প্রবাহ কমতে থাকে। পরবর্তীতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ১০০ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে আবারও তা কমে দাঁড়ায় ৯৪ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার, মার্চে পুনরায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০৭ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার। তারপর থেকে গত দুমাসেই রেমিট্যান্স প্রবাহের বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, দেশের কার্যরত বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে মে মাসে প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৮ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। তারপরের অবস্থান রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর। এসব ব্যাংকের মাধ্যেমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৫ কোটি ১৯ লাখ মার্কিন ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং বিদেশি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ২৬ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স।

এদিকে একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স আহরণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ডাচ-বাংলা ৭ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার ও ন্যাশনাল ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের কিছু বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।

২০১৬ সালে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩৬১ কোটি মার্কিন ডলার। যা ২০১৫ সালে ছিল ১ হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ১৭০ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার বা ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ। টাকার অংকে যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা।

এসআই/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।