ইসলামী ব্যাংকের দুই পরিচালকের পদত্যাগ


প্রকাশিত: ০৪:৫১ পিএম, ২৫ মে ২০১৭

ইসলামী ব্যাংকের সদ্য অপসারিত ভাইস চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র পরিচালক সৈয়দ আহসানুল আলম পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির সদ্য অপসারিত চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র পরিচালক আবদুল মাবুদ।

বৃহস্পতিবার দুজনই পদত্যাগ করেছেন বলে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আরাস্তু খান নিশিচত করেছেন। তবে বিষয়টি জানতে পদত্যাগকারী দুই পরিচালকের মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়। গত মঙ্গলবারই স্বতন্ত্র এ দুই পরিচালককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।

আরাস্তু খান বলেন, তারা দুজনই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। আগামী বোর্ড সভায় তাদের পদত্যাগপত্র উপস্থাপন করা হবে। বোর্ড এটি গ্রহণ করলে তা অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হবে। এরপরই পদত্যাগ কার্যকর হবে।

এর আগে, গত মঙ্গলবার কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে ব্যাংকটির ৩৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) আহসানুল আলম ও আবদুল মাবুদকে পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবি ওঠে। এজিএম ও পর্ষদের সভায় সৈয়দ আহসানুল আলম ছাড়া অন্য ১৮ পরিচালকই উপস্থিত ছিলেন। একইদিন ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় তাদের দুজনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। সেদিন চেয়ারম্যান আরাস্তু খান জানান, তারা স্বতন্ত্র পরিচালক পদে বহাল থাকবেন।

ব্যাংকটির পরিচালকদের কোন্দল আলোচনায় শুরু হয় স্বতন্ত্র পরিচালক সৈয়দ আহসানুল আলমের ফেসবুকে দেয়া পোস্টের মাধ্যমে। গত ১১ মে তিনি নিজের ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানান, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে নিয়ে প্লাস-মাইনাসের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তাই পরিচালনা পর্ষদ ও ভাইস চেয়ারম্যানের পদে দায়িত্ব পালন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার সরে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এরপর গত ১৩ মে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে স্বতন্ত্র এই পরিচালক কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানান, জাকাতের ৪৫০ কোটি টাকা ব্যাংকের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর জাকাত তহবিলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ইফতারের ১৩ কোটি টাকা এবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের সুবিধাভোগীদের তালিকাও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এ ঘোষণার পর বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে জাকাতের ৪৫০ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর জাকাত তহবিলের প্রদানের বিষয়ে সমালোচনা তৈরি হয়।

এর প্রেক্ষিতে গত ১৬ মে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আরাস্তু খানকে ডেকে পাঠান প্রধানমন্ত্রী। গত ১৭ মে ইসলামী ব্যাংক নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার জবাব দিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ আহসানুল আলম ব্যাংকের গোপনীয়তা ভেঙেছেন। পরিচালক হওয়ার সময় তিনি গোপনীয়তা রক্ষার যে শপথ করেছিলেন, তা লঙ্ঘন করেছেন। ব্যাংক নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন। আমি তাঁকে পদত্যাগ করতে বলব না, উনি নিজে সরে গেলে সমস্যা নেই।

এরপর ২০ মে সৈয়দ আহসানুল আলমসহ সাত পরিচালক স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৩ মে পরিচালনা পর্ষদের সভায় ব্যাংকের শীর্ষ পদ থেকে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় পরিচালকবৃন্দ বলেন, হুমকির মুখে যদি কোনো পরিচালককে পদত্যাগ করানো যায়, তবে একের পর এক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের পরিচালকদের বিদায় নিতে হবে। হুমকির মাধ্যমে কোনো পরিচালককে পদত্যাগ করানোর চেষ্টা করা হলে অনেক পরিচালক একযোগে পদত্যাগ করবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক আব্দুল মতিন, বোরহান উদ্দিন আহমেদ ও কাজী শহিদুল আলম। বাকিরা হলেন স্বতন্ত্র পরিচালক আবদুল মাবুদ, সাইফুল ইসলাম ও হেলাল আহমেদ চৌধুরী।

এসআই/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।