এসডিজি অর্জনে সহায়ক হতে পারে যাকাত


প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, ২৫ মে ২০১৭

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহায়ক হতে পারে যাকাত। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাকাতা আদায় ও ব্যবস্থাপনা করলে এটি সম্ভব। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

তারা বলছেন, ১৭টি লক্ষ্য ও ১৬৯টি টার্গেট নিয়ে এসডিজি নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মূল প্রতিপাদ্য হলো বিশ্বের সব মানুষকে এক সঙ্গে সামাজিক ও আর্থিক দিক থেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যাকাত হলো একটি ধর্মীয় অনুশাসন। যার মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব।

বৃহস্পতিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) অডিটোরিয়ামে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় অর্থনীতিবিদরা এসব কথা বলেন। ডিসিসিআই এবং সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ।

দারিদ্র্য বিমোচনে দেশের বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, যাকাত হলো একটি ধর্মীয় অনুশাসন, যার মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের ভাগ্য উন্নয়ন করা সম্ভব। যাকাত আহরণ, বিতরণ ও ব্যবস্থাপনা সক্রিয় করার জন্য সিজেডএম’র মত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করতে হবে। বর্তমানে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে জিডিপির মাত্র দুই শতাংশ। সরকারকে এ খাতে আরও বেশি বরাদ্দ দিতে হবে।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ ছাড়া এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয়। দারিদ্র্য বিমোচনে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে।

তিনি বলেন, ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাকাতের টাকায় দুস্থ মানুষের মাঝে বিশেষ করে শাড়ি, লুঙ্গি বা অন্যান্য দ্রব্য প্রদান করা ওই শ্রেণির মানুষের জীবনধারা পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে না। তাই এ ধরনের কার্যক্রমের প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা যেতে পারে।

মূল প্রবন্ধে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, আটটি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এমডিজি প্রণয়ন করা হয়েছিল তবে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১৭টি। উল্লিখিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য।

তিনি বলেন, এসডিজিতে বেসরকারি খাতের নতুন নতুন পণ্য, প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক ধারণাপত্র নিয়ে এগিয়ে আসা, আর্থিক প্রণোদনা প্রদান এবং সংশ্লিষ্ট আইনের সংস্কারের ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

ঢাকা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ১৭টি লক্ষ্য ও ১৬৯টি টার্গেট নিয়ে এসডিজি নির্ধারণ করা হয়েছে। যার মূল প্রতিপাদ্য হলো বিশ্বের সব মানুষকে এক সঙ্গে সামাজিক ও আর্থিক দিক থেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত এসডিজির লক্ষ্যমাত্রায় দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চতকরণ, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য করা এবং সামাজে আর্থিক বৈষম্য দূরীকরণসহ বিভিন্ন বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম)’র চেয়ারম্যান ও রহিম আফরোজের ডিরেক্টর নিয়াজ রহিম, ডিসিসিআই প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম, প্রাক্তন সহ-সভাপতি এম আবু হোরায়রাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমএএস/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।