রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও অর্জিত হয়নি লক্ষ্যমাত্রা


প্রকাশিত: ১১:৪৮ এএম, ০৮ মে ২০১৭

২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে রফতানি খাতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৮৭২ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত অর্থবছরের (২০১৫-১৬) একই সময়ের তুলনায় ১০৭ কোটি ডলার বেশি। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে এ সময় রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

সোমবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত এপ্রিল মাস পর্যন্ত রফতানি হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে (২০১৬-১৭) রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ১০ মাসে (২০১৬ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত) ২ হাজার ৯৯৯ কোটি ডলার রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৮৭২ কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।

ইপিবির প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল এপ্রিল মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৮৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ সময়ে ২৭৭ কোটি ৫৬ লাখ মার্কিন ডলার রফতানি আয় হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ কম। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এবার ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে পোশাক শিল্পকে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। বিশেষ করে ইউরোর দরপতন, ব্রেক্সিট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রভাবের কারণে আমাদের পণ্যের দরপতন হলেও ২ বছরে গ্যাস সঙ্কটসহ নানাবিধ কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে আমাদের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার যুক্তরাজ্যে ওই সময়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে।’

প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। তৈরি পোশাকে রফতানি আয়ের লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়নি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১০ মাসে তৈরি পোশাক খাতের পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছে ২ হাজার ৩১৩ কোটি মার্কিন ডলার। এ খাতের রফতানি আয় আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ২১ শতাংশ বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো যায়নি। চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল মেয়াদে নিটওয়্যার খাতের পণ্য রফতানিতে ১ হাজার ১২৫ কোটি ডলার এবং ওভেন গার্মেন্টস পণ্য রফতানিতে ১ হাজার ১১৮ কোটি ডলার আয় হয়েছে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জাগো নিউজকে বলেন, সারাবিশ্বেই বর্তমানে অর্থনীতিতে একটি শ্লথগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চীনে রফতানি প্রবৃদ্ধি কমেছে। অন্যান্য দেশের প্রবৃদ্ধিও বেশি ইতিবাচক ধারায় নেই। ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের সরে আসার সিদ্ধান্ত, পাউন্ড ও ইউরোর দরপতন সব মিলিয়ে বৈশ্বিক হিসেবে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলক ভালো বলা চলে। রফতানি প্রবৃদ্ধি এখনও ভালো অবস্থানে। তবে নন-ট্র্যাডিশনাল মার্কেটে আমাদের রফতানি বাড়াতে হবে।’

ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্যান্য পণ্যের মধ্যে গত ১০ মাসে কৃষি পণ্যের আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫.৬৩ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে চা রফতানিতে ১৬৫ শতাংশ ও শুকনো খাবারে ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধি কমেছে তামাক ও সবজিতে।

অন্যদিকে সিমেন্ট, কেমিক্যাল পণ্য, ওষুধ, প্লাস্টিক, রাবার, চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর বাইরে বাইসাইকেল, স্টেইনলেস স্টিল, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য এবং টেক্সটাইল খাতে প্রবৃদ্ধি কমেছে।

এমএ/এমএমএ/ওআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।