ডলার ৮২ টাকায় নামাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘নৈতিক চাপ’
হঠাৎ করে মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই মার্কিন ডলার ৮২ টাকার নিচে নামিয়ে আনতে ‘নৈতিক চাপ’ সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরিপেক্ষিতে আন্তঃব্যাংক ডলারের গড় দরের সঙ্গে আমদানিতে ২ টাকার বেশি না নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকার্স সভায় গভর্নর ফজলে কবিরসহ ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান, এস কে সুর চৌধুরী ও এসএম মনিরুজ্জামান এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রদান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) উপস্থিত ছিলেন।
আমদানির তুলনায় রফতানিতে কম প্রবৃদ্ধি ও রেমিট্যান্সে নেতিবাচক প্রবাহের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম সামান্য বেড়েছে। রমজান মাস সামনে রেখে ভোগ্যপণ্যের আমদানি দায় পরিশোধের চাপ বাড়ায় সম্প্রতি হঠাৎ করে ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ দশমিক ৬০ টাকায়।
বৈঠক শেষে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, মার্কিন ডলারের দাম বাড়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে এসেছে। তাই ডলার ৮২ টাকার নিচে নামিয়ে আনতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এখন থেকে ডলার কেনা ও বিক্রিতে পার্থক্য ২ টাকার বেশি হতে পারবে না। ফলে ডলারের দাম কমে আসতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ২০ মিলিয়ন ডালার স্টক আছে। তাই ডলারের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তি কারণ নেই। আগামী সপ্তাহেই ডলারের দাম ৮২ টাকার নিচে নেমে আসবে।
এস কে সুর চৌধুরী বলেন, আমদানির কারণে বাড়তি চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ডলার সরবরাহ করতে প্রস্তুত রয়েছে। এরই মধ্যে বাজারে কিছু ডলার বিক্রি করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও বিক্রি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, উন্মুক্ত বিনিময় হার ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বা কোনো বৈদেশিক মুদ্রার দাম ঠিক করে দিতে পারে না। এছাড়া ডলারের দাম স্বাভাবিক রাখতে সরাসরি হস্তক্ষেপ না করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক মাঝে মধ্যে বিভিন্ন উপায়ে নৈতিক চাপ সৃষ্টি করে।
ডেপুটি গভর্নর বলেন, কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের ঋণের প্রবৃদ্ধি ভালো, তাদের ঋণের মান গুণগত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সতর্কতার সঙ্গে ঋণ বিতরণের নির্দেশনার পাশাপাশি হাওরাঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যেও ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেন, রফতানি ও রেমিট্যান্স আয়ের সঙ্গে আমদানি ব্যায়ের একটা অসামঞ্জস্য হয়ে গেছে। এর ফলে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ৮২ টাকার একটা সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে, এখন দাম কমে আসবে।
এসআই/আরএস/আরআইপি