শেয়ার কেলেঙ্কারি : খালাস পেলেন রউফ চৌধুরী ও সাঈদ


প্রকাশিত: ১১:১২ এএম, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

র‌্যাংগস গ্রুপের কর্ণধার এম এ রউফ চৌধুরী ও এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ এইচ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির প্রমাণ মেলেনি। ফলে তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

১৯৯৬ সালে প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের শেয়ার কেলেঙ্কারির অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। দীর্ঘ শুনানির পর রোববার (২৩ এপ্রিল) শেয়ারবাজার সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ এ রায় দেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের নামে ১৯৯৬ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছেন। ওই সময়ে তারা মিতা টেক্সটাইল, প্রাইম টেক্সটাইল, বাটা সুজ ও বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন করেন। প্রতিষ্ঠানটি মোট ১২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা লেনদেন করে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি শুধু ফরেন ডেলিভারি ভার্সেস পেমেন্টের (ডিভিপি) মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন করে।

এক নম্বর আসামি (রউফ চৌধুরী) প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ ওই সময়ে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩টি শেয়ার বিক্রি করে, যার মূল্য ছিল ৬৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের রেকর্ড মোতাবেক আসামিরা এসিআই লিমিটেডের ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১৯টি শেয়ার বিক্রি করেন। অথচ ব্যাংক রেকর্ড অনুযায়ী শেয়ার বিক্রির পরিমাণ ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি, যার মধ্যে ফরেন ডিভিপির মাধ্যমে লেনদেন অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির সম্মুখীন হন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ-১৯৬৯ এর ২১ ধারা বলে গঠিত তদন্ত কমিটি ১৯৯৭ সালের ২৭ মার্চ একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

প্রতিবেদনে আসামিরা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ-১৯৬৯ এর ১৭ ধারার ই(২) বিধান লঙ্ঘন করেছেন বলে উল্লেখ করা হয় এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের ২৪ ধারার অধীনে আসামিদের শাস্তি দেয়ার সুপারিশ করা হয়।

তবে আজ (রোববার) মামলার রায় দেয়ার সময় বিচারক বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ১৯৬৯ অধ্যাদেশের ২৪ ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি এম এ রউফ চৌধুরী, সাঈদ এইচ চৌধুরী ও কোম্পানি প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজকে এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেয়া হচ্ছে।

রায় দেয়ার সময় এম এ রউফ চৌধুরী, সাঈদ এইচ চৌধুরী, আসামিপক্ষের আইনজীবী শেখ বাহারুল ইসলাম, আব্দুস সালাম খান, আলহাজ মো. বোরহান উদ্দিন ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা খান, আব্দুল্লাহ এম রফিকুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাঈদ এইচ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত জীবনে কোনো কলঙ্ক ছিল না। আর ভবিষ্যতেও থাকবে না। তবে ১৯৯৬ সালে কিছু দুষ্টু লোকের সঙ্গে পরিচয় হয়, যা পরে বুঝতে পারি। যে কারণে মামলায় জড়াতে হয়েছে। অথচ প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করে টাকাও ফেরত পাইনি। অন্যরা কোম্পানি বেনামে বিক্রয় করে টাকা আত্মসাৎ করে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা খান বলেন, রায়ের কপি পাওয়ার পরে তা বিএসইসিতে দাখিল করা হবে। এর আলোকে উচ্চ আদালতে আপিল করবে কি না তা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

মামলায় আনু জায়গীরদার এবং প্রিমিয়র সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমানের নামও আসামির তালিকায় রয়েছে। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে আসামি মশিউর রহমান ও আনু জায়গীরদারের বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে, যা আগামী ২ মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। যে কারণে শুধু প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ, এম এ রউফ চৌধুরী ও সাঈদ এইচ চৌধুরীকে নিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়।

এমএএস/আরএস/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।