সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে বড় পতন
টানা দু্ই সপ্তাহ দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে। শেষ সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের (১৬ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল) মধ্যে চার দিনই দরপতন হয়েছে। ফলে সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে মূল্য সূচক ও লেনদেনের বড় পতন হয়েছে। এতে কমে গেছে বাজার মূলধনের পারিমাণও।
টানা পতনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ১২৪ দশমিক ২০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছিল ৯০ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স’র পাশাপাশি সপ্তাহজুড়ে কমেছে অন্য দুটি সূচকও। ডিএসই-৩০ কমেছে ৩৬ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ৪৬ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ২০ শতাংশ।
আর শেষ সপ্তাহে ডিএসই শরীয়াহ সূচক কমেছে ২২ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে কমেছিল ১৭ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ গত সপ্তাহে সবকটি মূল্য সূচকের পতন ত্বরান্বিত হয়েছে।
সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে (১৬ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল) আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৬০ কোটি ৪১ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ লেনদেন কমেছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন কমে ১ হাজার ২০০ কোটি ৫২ লাখ বা ২৫ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ হয়েছে।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৪৩২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ৫৯৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা। তার আগের সপ্তাহে বাজারটিতে লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৭৯৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
মোট লেনদেনের পাশাপাশি শেষ সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেনও কমেছে। সপ্তাহটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন হয়েছে ৬৮৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। যা তার আগের সপ্তাহে ছিল ৭১৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৩২ কোটি ৮ লাখ টাকা।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ২৩১টির বা ৭০ শতাংশের দরপতন হয়েছে। অপরদিকে দাম বেড়েছে ৭৬টির বা ২৩ শতাংশের। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির বা ৭ শতাংশের।
গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৯৫ দশমিক ৫৩ শতাংশই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এছাড়া বাকি ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত, দশমিক ৯৪ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত এবং দশমিক ৫৫ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লংকাবাংলা ফিন্যান্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহজিবাজার পাওয়ারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২২ কোটি ৯০ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ৮০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিটি ব্যাংক।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস, রিজেন্ট টেক্সটাইল, বিডিকম অনলাইন, বেক্সিমকো ফার্মা, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ইভিন্স টেক্সটাইল এবং তুং হাই নিটিং।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছিল ৪ হাজার ১২ কোটি টাকা।
এমএএস/এআরএস/এমএস