মে থেকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের বাণিজ্যিক যাত্রা


প্রকাশিত: ০৮:২৬ এএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৭

মে মাস থেকে বাণিজ্যিক বা তফসিলি ব্যাংক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে অভিবাসীকর্মীদের জন্য বিশেষায়িত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। এর ফলে দেশের ৫৮তম বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হচ্ছে।

রোববার প্রবাসী কল্যাণ ভবনের সম্মেলন কক্ষে ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন পুনর্গঠনে ওয়েজ অর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ৫০ কোটি টাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আ ন ম মাসরুরুল হুদা সিরাজী এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, প্রবাসীদের অধিকহারে সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার পাশাপাশি বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুবিধা দেবে ব্যাংকটি।

প্রসঙ্গত, নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে ২০১১ সালে ১০০ কোটি টাকা মূলধনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে সরকার। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ার দাবি জানানো হয়।

এক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের আইন পরিবর্তন করা হলেও মূলধনের সঙ্কট দেখা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো তফসিলি ব্যাংকের ন্যূনতম ৪০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। বাকি ৩০০ কোটি টাকার ঘাটতি মেটাতে সরকারের পক্ষ থেকে ২৫০ কোটি টাকা এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা দেয়ার পরিকল্পনা গৃহীত হয়।

probashi

রোববার ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ঘোষিত অর্থ হস্তান্তর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি।

তিনি বলেন, অভিবাসীকর্মীরা আমাদের সোনার সন্তান। তাদের সুবিধার্থে সরকার যেসকল প্রকল্প হাতে নিয়েছে এর মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক অন্যতম। ব্যাংকটি বাণিজ্যিক হওয়ার মাধ্যমে এর সেবা আরও বিস্তৃত হবে। এখন পর্যন্ত দেয়া ঋণের মধ্যে ৮০ শতাংশ ফেরত পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, যে ঋণ দেয়া হবে, সেই অর্থ আদায় করাও অন্যতম একটি কাজ। মুখ দেখে ঋণ বিতরণ না করে যোগ্য ব্যক্তিকে ঋণ দিতে হবে। তাহলে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে।

প্রতিটি জেলায় এ ব্যাংকের শাখা খোলার আহ্বান জানিয়ে ব্যাংকটিকে আরও শক্তিশালী করতে এর কর্মীদের প্রতিও আহ্বান জানান মন্ত্রী।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ থেকে যে সংখ্যক কর্মী বিদেশ যায় এবং তাদের যে পরিমাণ ঋণের চাহিদা তার এক শতাংশ আমরা দিতে পারছিলাম না তহবিলের অভাবে। আশা করি তহবিল পুনর্গঠনের মাধ্যমে সে সমস্যা দূর হবে। স্বল্প সূদে অধিক সংখ্যক কর্মীকে আমরা ঋণ দিতে পারব।

এছাড়া সহজ শর্তে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আনার সুবিধাও দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে প্রতিষ্ঠাকালীন মোট মূলধনের মধ্যে ৯৫ কোটি টাকা ব্যাংকটিকে দিয়েছিল ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। এর মহাপরিচালক গাজী মুহম্মদ জুলহাস বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ২২ হাজার ৩৩৪ জনকে ঋণ দিয়েছে। এছাড়া দেশে ফেরত আসাদের পুনর্বাসনে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হয়।

তিনি বলেন, অনেকেই জমি, ভিটেমাটি বিক্রি করে বিদেশে যান। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণ সুবিধা আরও সহজ হলে আর কাউকে জমি বিক্রি করে বিদেশ যেতে হবে না।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব জাবেদ আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আজহারুল হকসহ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

জেপি/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।