ঘাটতি মেটাতে ১৫ হাজার কোটি টাকা চায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো


প্রকাশিত: ১১:৫৯ এএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৭

মূলধন ঘাটতি মেটাতে আবারও ১৫ হাজার কোটি টাকা চায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। মূলধন ঘাটতি থাকায় ব্যাংকগুলো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে।

এর আগে বেসিক ব্যাংক বড় ধরনের ঘাটতি মোকাবেলায় অর্থ জোগান দেয়ার আহ্বান জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অন্য ব্যাংকগুলো এখন অর্থের জোগান চাচ্ছে। এ অবস্থায় শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অর্থমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসার পক্ষে মত দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক ও আর্থিক বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ বিষয়ে সভা আহ্বানের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, সাতটি ব্যাংকের ঘাটতি পূরণের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে সময় ও তারিখ চেয়ে নথি প্রেরণ করা হলো। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, ব্যাংকিং বিভাগের সচিব, ব্যাংকগুলোর পরিচালক ও সিইওদের রাখা হবে।

bank

২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত পাঁচটি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের দুই হাজার ৬০৬ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের দুই হাজার ২৮৬ কোটি, রূপালী ব্যাংকের এক হাজার ৫৩ কোটি এবং জনতা ব্যাংকের ৬৬৪ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে।

এছাড়া বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক একাই সাত হাজার ৪৮৫ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ক্ষেত্রে মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ৭০৫ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির অন্যতম কারণ খেলাপি ঋণ ও অনিয়ম। সম্প্রতি বেসিক ব্যাংকে যা হয়েছে তা নজিরবিহীন। ব্যাপকহারে অনিয়ম না হলে ব্যাংকটিতে এভাবে মূলধন ঘাটতি হতো না। একই অবস্থা অন্যান্য ব্যাংকগুলোরও।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ২০১১-১২ অর্থবছরে বাজেট থেকে ৩৪১ কোটি টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫৪১ কোটি, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পাঁচ হাজার কোটি, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পাঁচ হাজার ৬৮ কোটি টাকার মূলধন জোগান দেয় সরকার।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা জোগান দিলেও চলতি অর্থবছরের বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মজিদ বলেন, মূলধন ঘাটতির কারণে ব্যাংক নিজের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারের কাছে দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকার বন্ড চাওয়া হয়েছে। আশা করছি, সরকারের সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে সমাধান দেবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে অনিয়ম ও খেলাপি ঋণ ঠেকাতে ব্যাংকগুলোকে আরও কঠোর হতে হবে। সংশ্লিষ্টদের তদারকিও জোরদার করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

এমএ/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।