শস্যবীজ সঙ্কট মেটাতে বড় উদ্যোগ


প্রকাশিত: ০৩:২৮ এএম, ২১ মার্চ ২০১৭

দেশে শস্যবীজের সঙ্কট মেটাতে বড় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ২৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় তিন ধরনের ১৮টি শস্যের বীজ উৎপাদন করা হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন বলছে, দেশের ডাল, তেল ও মসলার চাহিদার সিংহভাগই আমদানি করতে হয়। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হচ্ছে। এজন্য দেশেই উন্নতমানের বীজ উৎপাদন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যেই বীজ উৎপাদন প্রকল্প হাতে নিতে চায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

প্রকল্প অনুসারে কৃষকদের মধ্যে পৌঁছে দিতে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। যেসব শস্যের বীজ উৎপাদন করা হবে- মসুর, মুগ, মাসকলাই, খেসারি, অড়হড়, ফেলন, সরিষা, তিল, সয়াবিন, সূর্যমুখী, চীনা বাদাম, পেয়াজ, রসুন, হলুদ, মরিচ, আদা, ধনিয়া ও কালোজিরা। একইসঙ্গে বীজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে।

কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। এর মেয়াদকাল চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় দেশের আটটি বিভাগের ৬৪টি জেলার ৪৯০ উপজেলায় একযোগে কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর মাধ্যমে যে এলাকায় যে ফসল উপযোগী, ওই এলাকায় ওই ফসল উৎপাদনে উৎসাহ দেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এএন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরী বলেন, কৃষক পর্যায়ে টেকসই বীজ (ডাল, তেল ও মসলা) ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের মাধ্যমে এসব ফসলের মানসম্মত বীজ সরবরাহ ও ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হবে। একইসঙ্গে উন্নত বীজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এসব ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি, অধিক অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের মাধ্যমে চাহিদার ঘাটতি পূরণ ও আমদানি কমিয়ে আনা যাবে।

তিনি আরও বলেন, ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সাথী ফসল হিসেবে মৌ চাষকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষির অবদান প্রায় ১৭ শতাংশ। কিন্তু প্রতিবছর প্রায় ১ শতাংশ কৃষি জমি কমছে। যা দেশের খাদ্য ব্যবস্থাপনার জন্য হুমকিস্বরূপ। ফলে কম জমিতে অধিক ফসল ফলাতে খামার ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের বিকল্প নেই।

অন্যদিকে, ফসল উৎপাদনে সম্পৃক্ত কৃষকরা মানসম্মত বীজের অভাব, ফসলের কম উৎপাদনশীলতা, প্রযুক্তির অভাব ও মাটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যায় পড়েন। শুধু ভালো বীজ ব্যবহার করতে পারলেই একই জমিতে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ বেশি ফসল উৎপাদন সম্ভব। আর বাড়তি এ উৎপাদন অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও আমদানি হ্রাসে ভূমিকা রাখবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। এ জন্য প্রয়োজন উন্নত বীজ ব্যবস্থাপনা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃপক্ষ মনে করে, দানাজাতীয় শস্য উৎপাদনই নয়, পাশাপাশি উচ্চমূল্যের ফসল, যেমন- ডাল, তেল মসলা ও ফলের উন্নতমানের বীজ উৎপাদনেরও বেশ বড় বাজার রয়েছে বাংলাদেশে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ কৃষি বাণিজ্যিকীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষক, উৎপাদনকারী, সরকারি এজেন্সি, গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ অন্য স্টোক হোল্ডারারা জড়িত।

এমএ/এসআর/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।