ছুটির দিনে পোল্ট্রি মেলায় উপচে পড়া ভিড়
বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারের চলছে ১০ম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনার। মেলার দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মেলা প্রাঙ্গণে ছিল উপচে পড়া ভিড়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পোল্ট্রি খামারি ও উদ্যোক্তারা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। খামার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি জেনে নিচ্ছেন খামার করে সফল হওয়ার নানা কৌশল।
মেলায় সরজমিনে দেখা যায়, খামারিরা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্টল দেখছেন। কোন স্টলে নতুন কি প্রযুক্তি এসেছে সেদিকেই তাদের বেশি নজর। স্টলগুলোতে বসে থাকা এক্সপার্টদের কাছ থেকে খামারের টেকনিক্যাল বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জেনে নিচ্ছেন তারা। যারা স্টল নিয়ে বসেছেন, তারাও নিজেদের উৎপাদিত পণ্য ও সরঞ্জাম সম্পর্ক উদ্যোক্তাদের বিস্তারিত জানাচ্ছেন। এছাড়া উদ্যোক্তরা স্টলগুলো থেকে তাদের প্রত্যাশিত পুস্তিকা, লিফলেট ও ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহ করেছেন।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষ এ পোল্ট্রি মেলায় যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন পোল্ট্রি ব্যবসায়ী, পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ী, পোল্ট্রির সরঞ্জামাদি ব্যবসায়ী, মেডিসিন কোম্পানি, রিপ্রেজেনটেটিভ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ পোল্ট্রি শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত হাজারও উদ্যোক্তা।
তাদের মধ্যে কথা হয় টাঙ্গাইল সদর থেকে আসা শহিদুল সরকারের সঙ্গে। তার ব্রয়লার ফার্ম ছাড়ার একটি পোল্ট্রি ফিডের দোকান আছে। টাঙ্গাইল কলেজ পাড়ায় তার দোকানের নাম ‘সরকার পোল্ট্রি ফিড’।
মেলায় আসা সম্পর্কে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, মেলায় আসার মূল কারণ হলো তথ্য সংগ্রহ। পোল্ট্রি সংক্রান্ত যেখানেই মেলা হোক, সেখানেই আমি যাই। কারণ এসব মেলায় গেলে পোল্ট্রি সংক্রান্ত বিভিন্ন কোম্পানির লিফলেট ও কার্ড সংগ্রহ করা যায়। যেগুলো ব্যবসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে।
শহিদুল সরকার আরও বলেন, ২০১১ সালে আমি ১ হাজার ব্রয়লার মুরগি দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। বর্তমানে ফার্মে ৫ হাজার ব্রয়লার মুরগি আছে। আমার নিজের দোকানের খাবার দিয়ে ব্রয়লার পালন করি। মেলায় এসে অনেকগুলো পোল্ট্রি ফিডের কোম্পানির কার্ড নিয়ে গেলাম। যে কোম্পানির খাবার বিক্রি করলে বেশি লাভ হবে এবং মুরগি দ্রুত বাড়বে প্রয়োজনে সেই কোম্পানির খাবার বিক্রি করবো।
ব্যবসা কেমন চলছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে বেশি লাভ করতে পারছি না। মুরগির বাচ্চার দাম ও খাবারের দাম এখন অনেক বেশি।
গত ছয় বছরের ব্যবসা সম্পর্কে তিনি বলেন, সাড়ে তিন লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করেছিলাম ২০০৬ সালে। বর্তমানে আমার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ (পোল্ট্রি ও ফিডের দোকান মিলে) টাকায়।
শহিদুল সরকারের মতো মেলায় এসেছেন নবাবপুরের জুলহাস খান। তিনিও বিভিন্ন মেডিসিন কোম্পানির কার্ড ও লিফলেট সংগ্রহ করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি রাবারের শিশি বোতল তৈরি করি। প্লাস্টিকের কারখানা আছে। বিভিন্ন মেডিসিন কোম্পানির চাহিদা মতো বোতল তৈরি করে দেই। মেডিসিন কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করছি। পরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।
মেলায় পোল্ট্রি ও পোল্ট্রি খামার এবং পোল্ট্রি শিল্প স্থাপনের সঙ্গে যুক্ত এমন ৪৯০টি স্টল নিয়ে তিন দিনব্যাপী ১০ম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনার ২০১৭ শুরু হয়েছে গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে। শেষ হবে আগামীকাল শনিবার।
এফএইচএস/আরএস/পিআর