মেলায় ময়লা-আবর্জনা-দুর্গন্ধ


প্রকাশিত: ০৮:৩১ এএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট সময়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে না। দিন শেষে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা মেলা প্রাঙ্গণ থেকে রাতের মধ্যেই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার কথা রয়েছে। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না। প্রতিদিন সকালে এসে তার কাজ শুরু করেন। এতে করে সঠিকভাবে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ পরিষ্কার  করা হচ্ছে না। ফলে মেলা শুরু হওয়ার পরও থেকে যায় ময়লা-আবর্জনা।

জানা গেছে- সিটি কর্পোরেশন ও মেলার আয়োজক রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পক্ষ থেকে এসব অাবর্জনা অপসারণের জন্য তিন শতাধিক পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

ময়লা-আবর্জনার গন্ধে বেশ কয়েকটি স্টলকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, আবর্জনার কারণে গ্রাহকরা তাদের স্টলে আসছে না। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বারবার বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
 
সরেজমিনে দেখা গেছে- শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায়ও সিটি কর্পোরেশনের আবর্জনাবাহী গাড়ি মেলা প্রাঙ্গণে দেখা গেছে। পরিচ্ছন্ন কর্মীরাও আবর্জনা সরানোর কাজ করছেন। ততক্ষণেই কানায় কানায় ভর্তি হয়ে গেছে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। তবে মেলা প্রাঙ্গণের সার্বিক এ অব্যবস্থাপনার জন্য দর্শনার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ বিভিন্ন স্টল মালিকরাও।
 
moyla
জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের পাশের বিশাল অংশ মেলার বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের ময়লা-আবর্জনা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। সকাল ১১টায়ও এসব আবর্জনা সারানো হয়নি। এ স্তূপে কোনো আবর্জনা ব্যবস্থাপনা কর্মীদেরও চোখে পড়েনি।
 
মেলার অভিজাত বিভিন্ন স্টলের সামনের অস্থায়ী বিনেও পড়ে আছে ময়লা আবর্জনা। মেলা শুরুর পূর্বেই এসব আবর্জনা অপসারণ করার কথা। অথচ দায়ীত্বরত কর্মীরা বলছেন তারা কাজ করছেন।
 
মেলায় আবর্জনা অপসারণ কাজে নিয়োজিত সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী মোরশেদুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, গাড়ি আসতে দেরি হয়েছে। সেজন্য আমরা কাজ শুরু করতে পারিনি। সকাল ১০টার দিকে গাড়ি আসার পর ময়লা অপসারণের কাজ শুরু করেছি।
 
জানতে চাইলে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরচ্ছিন্নতা কর্মী মোহাম্মদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ৩০০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী রয়েছি। সকাল ৯টা থেকে রাত রাত ৯টা পর্যন্ত আমরা কাজ করি। এসময় চার থেকে ৫ বার পুরো মেলায় ঝাড়ু দেই।’
 
moyla
কিন্তু মেলায় এতো ময়লা কেন? জানতে চাইলে এই পরিচ্ছন্নতা কর্মী হাসি মুখে জাগো নিউজকে বলেন, `কেউ কাজ করে না। সবাই যদি কাজ করে তাহলে তো ময়লা থাকে না।`
 
শুধু অাবর্জনা নয়, মেলাপ্রাঙ্গণ জুড়ে দেখা গেছে ভাসমান হকারদের ঘর। তারা বিভিন্ন স্টলের পেছনে কাঠ, টিন ও পরিথিন ব্যবহার করে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে রাত্রীযাপন করছেন। এতে মেলার নিরাপত্তা নিয়ে সংসয় প্রকাশ করেছেন স্টল মালিকরা।
 
জানতে চাইলে সেবেক স্টলের ম্যানেজার ইকবাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের স্টলের পেছনেই ভাসমাদের একটি ঘর রয়েছে। তারা রাতে এখানেই থাকেন। রান্নাবান্না করেন। এদের কারণে কোনো দুর্ঘটনা হতে পারে। তাছাড়া রাতে অধিকাংশ স্টলের সামনে শুধু একটা পর্দা দেয়া থাকে। ফলে মালামাল চুরি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। মেলা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

গাজী গ্রুপের একজন কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, `লাখ লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে স্টল নিয়েছি। কিন্তু স্টলের আশপাশে ময়লার ভাগাড় পড়ে থাকে। কাকে বলবো? কোনো কাজ হয় না। তাই এখন আর অভিযোগও দেই না।`
 
এমএসএস/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।