পুঁজিবাজার স্বাভাবিক আছে : ডিএসই
শেয়ারবাজার মূল্যসূচক, আর্থিক লেনদেনসহ সব কিছুই স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। বৃহস্পতিবার ডিএসই প্রাঙ্গণে শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ডিএসইর চেয়ারম্যান বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, শেয়ারহোল্ডার পরিচালক রকিবুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক রুহুল আমীন প্রমুখ।
ডিএসইর এমডি বলেন,বাজারে ভয় পাওয়ার মতো কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। গত কয়েক মাস ধরে বাজার ক্রমেই গতিশীলতার দিকে এগুচ্ছে। ফিরে এসেছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে অর্থনীতির। এ পরিস্থিতিতে একটি টেকসই ও উন্নতমানের পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে বিনিয়োগকারীর সচেতনতা, মার্কেট স্টেকহোল্ডারদের নিয়মনীতি পরিপালনের বিকল্প নেই।
তিনি জানান, সরকারসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলেই বাজারে স্থিতিশীলতা ও গতিশীলতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইতিমধ্যে পুঁজিবাজারে বহুমুখী সংস্থার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্য্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
মাজেদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে প্রতিদিনই পুরাতনদের পাশাপাশি নতুন নতুন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। আমরা প্রত্যেকেই বাজারের স্থায়ী যৌক্তিক, গতিশীল, স্থিতিশীলতা চাই। কোম্পানির ইপিএস, এনএভি, পিই রেশিও উদ্যোক্তা ইত্যাদি যাচাই করে বিনিয়োগ করুন। কোম্পানির সার্বিক বিষয়াদির পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণই বিনিয়োগের মূলমন্ত্র হতে হবে।
পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় দেশের জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান তুলনামূলক কম উল্লেখ করে ডিএসইর এমডি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি আগামী তিন বছরের মধ্যে উন্নত দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জিডিপিতে পুঁজিবাজারের মূল অবদান বাড়াতে। স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে আমরা বলতে পারি যে অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগতভাবে পুঁজিবাজার এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত। এখনকার নিয়ম নীতিও অত্যন্ত কঠোর ও প্রয়োগিক। বর্তমানে হিউজ ভলিউমের ট্রেড সামলানোর সক্ষমতা এক্সচেঞ্জের আছে।
তিনি আরও বলেন, সরবরাহ ও চাহিদা অর্থনীতির মৌলিক তত্ত্বগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং এ তত্ত্বকে বাজার অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে ধরা হয়। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতাও নির্ভর করে চহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরবরাহের উন্নয়নের ওপর। এখানে যেমন আর্থিক তারল্যের প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন ভালো শেয়ারের সরবরাহ নিশ্চিত করা। শুধু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্য আনতে যথেষ্ট নয়। তাই বাজারের অতিরিক্ত চাহিদার কথা মাথায় রেখে বহুজাতিক কোম্পানিসহ রাষ্ট্রায়াত্ব কোম্পানিগুলোর শেয়ার সরবরাহ বাড়ানো প্রয়োজন।
গত ৫ বছরে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে শেয়ারবাজারের উত্থানের সামঞ্জস্য ছিল না মন্তব্য করে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, গত ৩ মাস যাবত এ সামঞ্জস্য হচ্ছে। কিন্তু এ স্বাভাবিক সামঞ্জস্য নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। তবে বাজারে সবকিছুই স্বাভাবিক আছে।
তিনি বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ বা গুরুত্ব দেয়ায় গত ৩ মাসে শেয়ারবাজারে উত্থান ঘটেছে। আর শেয়ার হাত বদল বেশি হওয়ার কারণে লেনদেন বেশি হচ্ছে ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ছে, যা মূল্যসূচকে বড় ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
রকিবুর রহমান বলেন, অনেক সময় স্মার্ট বোদ্ধারা শেয়ার দর কৃত্রিমভাবে উঠা-নামা করানোর চেষ্টা করে। এরা শুধু শেয়ারবাজারের ইতিবাচক অবস্থায় নেতিবাচক মন্তব্য করে। কিন্তু শেয়ারবাজারের মন্দাবস্থায় কোন মন্তব্য করে না। এরা হয়তো শেয়ারবাজার পছন্দ করে না।
এমএএস/এএইচ/এমএস