বাণিজ্য চুক্তির স্থায়ীকরণ চায় ভারত


প্রকাশিত: ০৮:৪২ পিএম, ০৮ মার্চ ২০১৫

চলতি মাসের ৩১ তারিখ মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তিটি স্থায়ী করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
এরইসঙ্গে চুক্তির আওতায় দুই দেশের নৌ প্রটোকলে যাত্রী পরিবহনের সুযোগও চেয়েছে ভারত।

তবে বাংলাদেশ তরফে এখনই চুক্তিটি স্থায়ী করার বিষয়ে সম্মতি নেই বলে পররাষ্ট্র, নৌ পরিবহন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে।

রোববার (০৮ মার্চ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি এবং এর আওতায় থাকা নৌ প্রটোকল নবায়ন, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন নিয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা হয়।

বৈঠকে নৌ প্রটোকলের আওতায় যাত্রী পরিবহন নিয়ে আলোচনা হয়। তবে চুক্তি স্থায়ী করা নিয়ে বৈঠকে মতানৈক্য হয় বলে জানা গেছে।  ফলে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় বৈঠক।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান চুক্তি এখনই স্থায়ী করতে রাজি নয় নৌ মন্ত্রণালয়। বৈঠকে উপস্থিত থেকে নৌ সচিব শফিক আল মেহেদী চুক্তিটি স্থায়ী করে আগের নিয়মে তিন বছর মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে মত দেন। তবে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শর্তসাপেক্ষে স্থায়ী করার পক্ষে।

এ বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও ১১ মার্চ পরবর্তী বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে ভারত সরকারকে। দুই দেশ একমত হওয়ার পরই চুক্তি সই হবে। ওই বৈঠকেই জানা যাবে স্থায়ী নাকি অস্থায়ী বাণিজ্য চুক্তিতে যাচ্ছে দু’দেশ।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, রোববারের বৈঠকে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। দুই দেশের বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তিটি নবায়নের পাশাপাশি প্রটোকলে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। পরবর্তী বৈঠক ১১ মার্চ ডাকা হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক পথটিই বেছে নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বাণিজ্য চুক্তির আওতায় থাকা প্রটোকল যাত্রী পরিবহন করতে চাইলে তাতে পরিবর্তন আনতে হবে। আর নৌ প্রটোকলে পরিবর্তন আনতে হলে বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তিতে পরিবর্তন আনতে হবে। পাশাপাশি চুক্তিটি স্থায়ী করতে চাইলেও মূল চুক্তিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

এক কথায় ভারত যে প্রস্তাব করেছে তা কার্যকর করতে হলে দুই দেশের বিদ্যমান ১৯৭২ সালের চুক্তিটি সংশোধন করতে হবে। যার জন্য মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন রয়েছে।

জানা গেছে, এর আগে একাধিকবার দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে প্রস্তাব দিয়েছিলো ভারত। দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি ও নৌ প্রটোকলের মেয়াদ ছিলো ২ বছর। পরবর্তিতে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে ভারত প্রটোকলটির মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানোর প্রস্তাব করে। কিন্তু রাজি হয়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রটোকলটি দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তির আওতায় কার্যকর হয়।

তাই বাণিজ্য চুক্তির নবায়ন মেয়াদ তিন বছর হওয়ায় প্রটোকলের মেয়াদ পাঁচ বছর করা সম্ভব নয়। প্রটোকলের মেয়াদ বাড়াতে হলে বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদও বাড়াতে হবে।

তবে ২০১৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশীদের দ্বিপাক্ষিক সফরের মধ্যে দিয়ে বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদ ৩ বছর করা হয়। সেই সঙ্গে নৌ প্রটোকল চুক্তিটিও তিন বছর মেয়াদি হয়ে যায়। আবার ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্টকে সামনে রেখে ভারতের পক্ষ থেকে নৌ প্রটোকল বাণিজ্য চুক্তি থেকে আলাদা করে ১০ বছর মেয়াদি চুক্তি করার প্রস্তাব আসে। আর এবার স্থায়ী চুক্তির নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে প্রস্তাব আসে।

এর আগে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে ভারত প্রটোকলটির মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানোর প্রস্তাব করে। কিন্তু রাজি হয়নি বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রটোকলটি দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তির আওতায় কার্যকর হয়। তাই বাণিজ্য চুক্তির নবায়ন মেয়াদ তিন বছর হওয়ায় প্রটোকলের মেয়াদ পাঁচ বছর করা সম্ভব নয়। প্রটোকলের মেয়াদ বাড়াতে হলে বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদও বাড়াতে হবে।

এসআরজে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।