৩৭৬ কোটি টাকায় বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিকায়ন


প্রকাশিত: ০৫:৩৪ পিএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬

গাজিপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো ও গবেষণা সক্ষমতা শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এ জন্য ৩৭৫ কোটি ৭১ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন হতে যাচ্ছে। পুরো অর্থই সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে বরাদ্দ দেয়া হবে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) মঙ্গলবারের সভায় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। চলতি বছর থেকে ২০২১ সাল নাগাদ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য জিয়াউল ইসলাম বলেন, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ। আশা করা যাচ্ছে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আরো বেশিসংখ্যাক শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা পাবে। গুরুত্ব বিবেচনায় প্রকল্পটি আগামী একনেকে উপস্থাপনা করা হবে।

এ প্রকল্পের আওতায় ১০ তলাবিশিষ্ট ১টি ছাত্র হল ও একটি ছাত্রী হল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ২টি ১০ তলাবিশিষ্ট অ্যাকাডেমিক ভবন (২য় কৃষি অনুষদ ভবন ও ভেটেরিনারি কমপ্লেক্স ভবন) নির্মাণ; একটি আন্তর্জাতিক কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ; শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য ২টি ১০ তলা ইউটিলিটি ভবন নির্মাণ; যানবাহন গ্যারেজ নির্মাণ; সিকিউরিটি ব্যারাক নির্মাণ; তিন তলাবিশিষ্ট মাঠ গবেষণাগার কমপ্লেক্স নির্মাণ; পাম্প হাউজ নির্মাণ; অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ; মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের গবেষণার জন্য পুকুর খনন ; শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য বৈজ্ঞানিক ও অফিস যন্ত্রপাতি, কেমিক্যালস এবং গ্লাসওয়ার ক্রয়; ৪টি যানবাহন (১টি বাস, ২টি মিনিবাস ও ১টি জিপ/মিনিবাস) ক্রয় এবং আসবাবপত্র ক্রয়, বই ও জার্নাল ক্রয় করা হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিএসসি প্রোগ্রামসমূহে যেসব ছাত্র-ছাত্রী ভতির সুযোগ পাচ্ছে তাদের অর্ধেকই ছাত্রী। এ বিশ্ববিদ্যালয় একটি সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হলেও শিক্ষার্থী থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক হল নেই। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর জন্য পৃথকভাবে ২টি হল নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষকদের অফিস, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য গবেষণাগার ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের অভাবে নূন্যতম শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।

এ প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা, অ্যাকাডেমি, আবাসিক ও অন্যান্য সুবিধাদি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে বাস্তব চাহিদা সরেজমিনে যাচাই করে প্রকল্পের বিভিন্ন অঙ্গের প্রয়োজনীয়তা, পরিমাণ ও ব্যয় যুক্তিযুক্তকরণের নিমিত্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, আইএমইডি ও পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত কমিটি কর্তৃক গত ৩১ আগস্ট প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে প্রণীত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশোধিত ডিপিপির উপর গত ৩০ অক্টোবর উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রকল্পটি কতিপয় শর্তে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়। সভার সুপারিশের আলোকে ৩৭৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এ প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষির উন্নয়ন তথা জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে সক্ষম প্রয়োজনীয় উচ্চশিক্ষিত, সৃজনশীল, সুদক্ষ ও আধুনিক কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কৃষিবিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণ কর্মী তৈরির লক্ষ্যে গাজীপুর জেলার সালনায় ১৯৮৩ সালে ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ ইন এগ্রিকালচার (ইপসা) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইপসা সুনামের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানের এমএস ও পিএইচডি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ইনস্টিটিউটটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমমর্যাদা সম্পন্ন একটি পুর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত কৃষিশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ইপসা আইন প্রবর্তন করে।

পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় এবং ১৯৯৮ সালের ৮ জুলাই ‘বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯৮’ অনুমোদিত হয়। অতঃপর ন্যূনতম অবকাঠামো তৈরির পর ২০০৫ সাল থেকে বিএস (কৃষি) প্রোগ্রামে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা শুরু হয়।

এমইউএইচ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।