বিকাশে হুন্ডি : ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ


প্রকাশিত: ০৩:১০ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০১৬

দেশের জেলা ও উপজেলা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বিকাশের মাধ্যমে হুন্ডির শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। যার প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয় রেমিট্যান্সে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বিকাশ এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক বিকাশের সঙ্গে এ সংক্রান্ত এক বৈঠক করে। বৈঠকে বিকাশের মাধ্যমে হুন্ডি কার্যক্রমের যে অভিযোগ উঠেছে, তা বন্ধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, সম্প্রতি বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে বিকাশসহ ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং ও রেমিট্যান্স সংক্রান্ত অনিয়মের বিষয়ে। যেমন প্রবাসীরা বিদেশ থেকে ই-মেইল অথবা এসএমএস’র মাধ্যমে ডলার নিশ্চিত করলে বাংলাদেশে বিকাশ এজেন্টরা সেই ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করছে। এতে প্রবাসীদের কষ্টে অর্জিত রেমিট্যান্স দেশে আসছে না। কীভাবে এটি বন্ধ করা যায় তা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিকাশের সঙ্গে আলোচনা করেছে। একইসঙ্গে রেমিট্যান্সের অর্থ লেনদেনকারী এজেন্টদের নজরদারিতে আনতে বলা হয়েছে, যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।

জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা সহজে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছে। তাই হুন্ডি ব্যবসায়ীদের প্রতি তাদের আস্থা বেশি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই অবৈধ ব্যবসা নিয়ে উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্টরা।  

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, ব্র্যাক ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বিকাশের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও সিঙ্গাপুর ও কোরিয়া থেকে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। অবৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার কারণে গত কয়েক মাসে ধারাবাহিকভাবে দেশে কমেছে প্রবাসী আয়।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে জাগো নিউজকে জানান।

সম্প্রতি ছোট অংকের অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে না এসে হুন্ডির মাধ্যমে আসছে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৭ কর্মকর্তা, বিকাশের তিনজন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের দুইজন এবং ইসলামী ব্যাংকের এম ক্যাশের দুই কর্তাকর্তাকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি একটি সভা করেছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যেসব এলাকায় হুন্ডির মাধ্যমে টাকা আসে সে এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করতে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি (২০১৬-২০১৭) অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর প্রান্তিকে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন মোট ৪২৫ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছর একই সময়ে যা ছিল ৫০৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ৭৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার বা ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ।

এসআই/ওআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।