ঈদে লেনদেন বাড়লেও স্থিতিশীল কলমানি মার্কেট


প্রকাশিত: ০৬:০৮ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রতিবছরই ঈদের আগে বেড়ে যায় ব্যাংকের নগদ অর্থের চাহিদা। তবে এবার ব্যাংকগুলোতে বিপুল পরিমাণ অলস তারল্য থাকায় রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হলেও স্বাভাবিক ছিল (আন্তঃব্যাংকিং) কলমানি বাজার।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর টাকার সঙ্কট দেখা দিলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার অর্থাৎ কলমানি মার্কেট থেকে তারা স্বল্পসময়ের জন্য ধার করে থাকে। টাকার চাহিদা বেশি থাকলে ধার করতে অধিক সুদ গুনতে হয়। আর চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি থাকলে সুদ কম গুনতে হয়। সাধারণত ঈদের আগে ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের টাকা উত্তোলন বেড়ে যায়। এ সময় অধিকাংশ ব্যাংকের নগদ টাকার সংকটের কারণে কলমানি মার্কেটে সুদের হারও বাড়ে। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন।

এবার ঈদের আগে শেষ কার্যদিবস ছিল বৃহস্পতিবার। ফলে ব্যাংকগুলোতে ছিল গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড়। ওইদিন নগদ টাকা উত্তোলন ও জমা দেওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইন ছিল ব্যাংকগুলোতে। তবে কোরবানির পশুসহ বাড়তি কেনাকাটায় নগট টাকা তোলার চাপ বাড়লেও শেষ কার্যদিবসেও আন্তঃব্যাংক কলমানির সুদের হার ছিল স্বাভাবিক। এদিন কলমানিতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে লেনদেন হয়েছে। তবে সুদের হার না বাড়লেও বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরেই এই বাজারের সুদহার খুব একটা বাড়তে দেখা যায়নি। যার মূল কারণ বর্তমান ব্যাংকিং খাতে এক লাখ কোটি টাকার বেশি উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘ বিনিয়োগ স্থবিরতায় অধিকাংশ ব্যাংকের কাছেই উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। এ কারণে ঈদের আগে নগদ টাকার চাহিদা বাড়লেও কলমানিতে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার আন্তঃব্যাংক কলমানি বাজারে ব্যাংক টু ব্যাংক লেনদেন হয়েছে ৩ থেকে ৪ শতাংশ সুদে। আর ব্যাংক টু নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে লেনদেন হয়েছে ৩ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে। এদিন ৭ হাজার ২০৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।

আগের কার্যদিবস বুধবার কলমানি বাজারে ব্যাংক টু ব্যাংক ২ থেকে ৪ শতাংশ এবং ব্যাংক টু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে লেনদেন হয়েছিল। একইসঙ্গে ওইদিন এই বাজারে ৬ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়। চলতি মাসের আগের কার্যদিবসগুলোতেও এই বাজারে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ শতাংশ সুদেই লেনদেন হয় এবং মোট লেনদেন ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত ছিল।

মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার ফনীন্দ্র ত্রিবেদী জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের আগে বৃহস্পতিবার ছিল শেষ কার্যদিবস। তাই সকাল থেকে গ্রাহকের উপচেপড়া ভিড় ছিল। দীর্ঘ ছয়দিনের ছুটি কারণে অনেক গ্রাহক নগদ টাকা তুলে রেখেছেন। এর স্বাভাবিক দিনের তুলনায় চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি লেনেদেন বেড়েছে। তবে এবার নগদ টাকার সমস্যা নেই। তাই লেনদেনেও কোনো সমস্যা হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা জানান, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। ফলে ঈদের আগে নগদ টাকার চাহিদা বাড়লেও কোনো সংকট সৃষ্টি হয়নি। তাই কলমানি স্থিতিশীল ছিল।

এছাড়াও ঈদের বাড়তি কেনাকাটার জন্য গ্রাহকদের সুবিধার্থে সব ব্যাংকের এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এটিএম মেশিন, পস মেশিন এবং ই-পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে লেনদেন সার্বক্ষণিক সচল রাখতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এসআই/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।