পোশাক খাত জিম্মি : আমরা মরতে চাই না, বাঁচতে চাই
গত সাত দিনের অবরোধ কর্মসূচিতে পোশাক খাতের ৪৫০ কোটি টাকার পণ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জানিয়েছে পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ। বিজিএমইএ এর অভিযোগ, পোশাক শিল্পের ঘাড়ে পা দিয়ে রাজনীতি চলছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে রাজনীতিবিদরা ব্যবসা, বিনিয়োগকে জিম্মি করেছে। এটা কোন ধরনের রাজনীতি। রাজনৈতিক সসিংসতা দানব আকার নিয়েছে। তৈরি পোশাক খাত মরতে চায় না, বাঁচতে চাই। তাই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাজনীতি করুন। নিরাপদ সাপ্লাই চেন দিন।
তৈরি পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ তরফ থেকে স্পষ্ট করে এসব কথা বলা হয়েছে। সোমবার দুপুরে সংগঠনের কারওয়ান বাজার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি বলছে, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমাদের অস্তিত্ব আজ বিপন্নপ্রায়।
তবে রাজনৈতিক এমন সংকটময় পরিস্থিতি হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন সংলাপের উদ্যোগ আর নেবেন না ব্যবসায়িরা। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার কাছে যেতে পারে। তাকে অনুরোধ করতে আপত্তি নেই তাদের, যাতে পোশাক শিল্পের সংশ্লিষ্ট সব অবরোধের আওতামুক্ত থাকে।
লিখিত বক্তব্যে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ২০১৩ সালে এই শিল্পে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা গত বছর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করি। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে আবারও ক্রেতাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। গত কয়েকদিনে আমাদের ৪৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পোশাক খাত। আজ শিল্প বিপর্যয়ের মুখে। এটা ২০১৩ সাল নয়। ২০১৩ সালে মিয়ানমার ছিলো না। এখন সেটি মনে করলে, আমরা বোকার স্বর্গে বাস করছি। ক্রেতারা জানতে চাইছে, দেশের পরিস্থিতি। আমরা যদিও বলছে, ব্যবসায় ফিলেছে, তারা বলছে, ১২ দিন ধরে সব বন্ধ। তাদের কাছে বার্তা যাচ্ছে। তারা বছরের শুরুতে ক্রয় আদেশ নিয়ে আসতে পারছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পোশাক খাত আজ গভীর সংকটে। আমাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে রাজনীতি হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে। আমরা রাজনীতি বুঝি না। অর্থনীতি বুঝি।
রাজনীতিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা রাজনীতি করেন। জাতীয় স্বার্থে আমাদের শিল্পকে সকল কর্মসূচি থেকে মুক্ত রাখুন। আমদানি রপ্তানির জন্য মহাসড়ক অরোধের বাইরে রাখুন। এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা চাইছি। আপনাদের কাছে আমাদের আকুল আবেদন এটি।
আতিকুল ইসলাম বলেন, এভাবে চলতে থাকলে শ্রমিকদের বেতন দিতে না পেরে দেউলিয়া হয়ে যাবেন ব্যবসায়িরা। ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না। এর দায় কে নিবে।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলা হয়, বিজিএমইএ’র সদস্যা সংখ্যা ৫ হাজার ৮৭৬ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২২২টি। রুগ্ন শিল্প বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩৯টি। এসবের দায় কার।
তবে আপনার কোন সংলাপের কোন উদ্যোগ নেবেন কিনা প্রশ্নে সভাপতি বলেন, আমার এর আগেও সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু হয়নি। আর কোন উদ্যোগ নেব না। তবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কাছে যাবো। তাকে বুঝিয়ে বলব, যাতে পোশাক খাত রেহাই পায়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।