মহেশখালীতে চীনও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে চায়


প্রকাশিত: ০৭:২০ এএম, ১৬ জুলাই ২০১৬

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারের মহেশখালীতে এবার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে চীন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যৌথভাবে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কাজ করবে সে দেশের সেপকো ইলেকট্রিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন। এরআগে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জাপানের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে সরকার। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গেও চুক্তি সইয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে।

চীনের সঙ্গে যৌথভাবে তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি খসড়াও তৈরি করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। খসড়ার আলোকে ইতিমধ্যে সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, শিগিগরই চীনের সেপকো কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষর হবে।

মাতারবাড়িতে এরই মধ্যে জাপানের অর্থায়নে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এর পাশেই ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরেকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে মালয়েশিয়া। এছাড়া সিঙ্গাপুরও নির্মাণ করবে ১২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ।

বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মহেশখালীতে ১৩২০ মেগাওয়াট তাপভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়ে গত মার্চে একটি খসড়া প্রস্তাব জমা দেয় সেপকো। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডও আলাদা একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করে। যে খসড়া প্রস্তাবের ওপর গত মাসের শেষ সপ্তাহে বিদ্যুৎ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জাপান, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের পর চীনের অর্থায়নে মহেশখালীতে আরেকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে সরকার। এটি নির্মাণে ব্যয়ের পরিমাণ এখনো নির্ধারণ হয়নি। তবে ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রকল্পে ঋণ ও ইক্যুইটির অনুপাত হবে ৭০ঃ৩০। অর্থাৎ প্রকল্পের ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ করবে সেপকো। বাকি ৩০ শতাংশ করবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। এ ছাড়া ২০৩০ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে ক্ষমতাসীনদের। এর মধ্যে মহেশখালী থেকেই ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ঝুঁকছে সরকার। আর সে জন্য মহেশখালী দ্বীপকেই বেছে নেয়া হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ কমে আসছে। সে জন্য সরকার বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। ইতিমধ্যে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ভারতের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। পায়রাতে চীনের সঙ্গে এবং মাতারবাড়িতে জাপানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। শিগগিরই অন্য দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি সই হবে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজও করছে সেপকো। এছাড়া পটুয়াখালীর পায়রা এলাকায় বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ উদ্যোগে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে।

বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।