বাংলাদেশ হবে সবার দেশ

ইব্রাহীম হুসাইন অভি
ইব্রাহীম হুসাইন অভি ইব্রাহীম হুসাইন অভি
প্রকাশিত: ০২:৪৮ পিএম, ২৬ মার্চ ২০২৫

ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন একদিনের বা কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ের বৈষম্যের জন্য হয়নি। এটা আমাদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বৈষম্যের ফল।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে আমাদের মধ্যে নতুন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। শুধু অর্থনৈতিকভাবেই উন্নত নয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিকভাবে অংশগ্রহণমূলক, সুশাসনের ভিত্তিতে একটা দেশ দেখতে চাই। সেই প্রত্যাশাটা এবার বেশি। অর্থনৈতিক উন্নতিটা যাতে সমাজের প্রান্তিক মানুষেরা সমানভাবে ভোগ করতে পারে সেটা নিশ্চিত করাই স্বাধীনতা দিবসের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

জাগো নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ অর্থনীতিবিদ ২০২৫ সালের স্বাধীনতা দিবসে তার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুর্নীতি কমে যাবে, সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে, গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে এবং গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র থাকবে মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা। প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবে এবং সেই সিদ্ধান্ত সব মানুষের জন্য হবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

‘অতীতের বিভিন্ন শাসনামলে আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক নীতি এবং সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। রাজনৈতিক দর্শন, রাজনৈতিক বিভাজন ইত্যাদির কারণে স্বাধীনতার সমান সুফল এমনকি স্বাধীনতার পুরো সুফল আমরা ভোগ করতে পারিনি। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটলেও মানুষ সে উন্নয়নের স্বাদ পায়নি। এখনও অনেক ক্ষেত্রে বৈষম্য বিরাজমান, যা স্বাধীনতার অঙ্গীকার পূরণের পথে বড় অন্তরায়।’

সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘যে সব বৈষম্যের কারণে এদেশের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবন দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, সেটা সম্পূর্ণরূপে মানুষের কল্যাণে আসেনি। এখন পর্যন্ত সমাজে বৈষম্য বিরাজমান। আর এ সব বৈষম্য দূর করতে যে ধরনের মানসিক এবং রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলের সিদ্ধান্ত দরকার সেটা দীর্ঘ ৫৪ বছরেও ঘটেনি। কিন্তু ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার ত্যাগ এবং তাদের রক্তের বিনিময়ে এবার একটি নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে আমার মনে হয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের একটি ন্যায়ভিত্তিক এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

‘আমি আশা করব যে স্বাধীনতা দিবস আসছে, সেটা আমাদের স্বাধীনতার উষালগ্নে যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, শহীদদের যে স্বপ্ন ছিল, সেটা পূরণ হবে। সেই সঙ্গে নতুন প্রজন্ম বুকের তাজা রক্ত দিয়ে যে ধরনের বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছে, যেখানে সবার স্বপ্নপূরণ হবে, সবাই কথা বলতে পারবে, সবাই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পাবে, সেই ইচ্ছা পূরণ হবে।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘নতুন প্রজন্ম একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যেতে চায়, যেখানে বাংলাদেশ হবে উন্নত, সবার অধিকার নিশ্চিত থাকবে এবং সবাই সমান সুযোগ ভোগ করবে। আমি আশা করব এবারের স্বাধীনতা দিবসে নতুন প্রজন্মের স্বপ্নপূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ার কাজটি সংস্কারের মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন করবে। বাংলাদেশ হবে সবার দেশ।’

আইএইচও/এমএমএআর/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।