বিএপিএলসি সভাপতি
নিয়ন্ত্রক সংস্থার আশীর্বাদ ছাড়া দুর্নীতি হতে পারে না

নিয়ন্ত্রক সংস্থার আশীর্বাদ ছাড়া দুর্নীতি হতে পারে না মন্তব্য করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রুপালী হক চৌধুরী বলেছেন, যারা দুর্নীতি করে তাদের কিছু না কিছু শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশকে ভালোবাসা আমাদের সবকিছুর শেষে পড়ে আছে। আমাদের একমাত্র মন্ত্র হওয়া উচিত মানুষের জীবনমান উন্নত করা। সেটাই যদি আমার মন্ত্র হয়, তাহলে আমার আর হাজার হাজার কোটি টাকার দরকার হয় না। এক জীবনে আমি কত কোটি খাব, একসঙ্গে কয়টা বিছানায় আমরা ঘুমাতে পারব, কয়টা বাড়িতে আমরা থাকতে পারব? সুতরাং, আমাদের ভিতরে একটা চেতনা আসতে হবে। সেটা হলো- আমি দেশের জন্য কিছু করব।
রোববার (২৩ মার্চ) পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’- এ তিনি এসব কথা বলেন। সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া।
তালিকভুক্ত কিছু কোম্পনি প্রকৃত খেলাপি ঋণ না দেখিয়ে আর্থিক প্রতিবেদনে অনেক কম দেখাতো। এই অডিট রিপোর্ট করতো সিএ ফার্ম। সিএ ফার্মের জবাবদিহিতার জায়গা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে রুপালী হক বলেন, করাপশন ক্যান নট হ্যাপেন, ইফ ইট ডাজ নট হ্যাভ দ্য ব্লেসিং অফ দ্য রেগুলেটরি বডি (নিয়ন্ত্রক সংস্থার আশীর্বাদ ছাড়া দুর্নীতি হতে পারে না)। যে অডিট ফার্ম এ ধরনের (অনিয়মের) রিপোর্ট করেছে তার লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। আমাদের উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। যারা এ ধরনের দুর্নীতি করে তাদের কিছু না কিছু শাস্তি পেতে হবে।
তিনি বলেন, আমার রেগুলেটরি বডি (নিয়ন্ত্রক সংস্থা) এমন হতে হবে যেখানে যে দোষ করবে তাকেই শাস্তি দেওয়া হবে। মানুষ কাজ করে দুই কারণে। একটা হলো- ইনসেনটিভ, আরেকটা হচ্ছে- শাস্তি। সুতরাং আপনি কোনো রকমের কিছু করলেন না, তাহলে তো ওই লোকগুলো আরও বেশি সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ ২০ শতাংশ করে কিছু টাকা ছাপিয়ে দেখালাম আমার চলছে, চলছে, চলছে। এটা হতে পারে না। আমার সবাই ওখানে। আমি নিজেও ওখানে আছি, যে নিয়ন্ত্রক সংস্থার উনিও আছেন। আবার যিনি অডিট রিপোর্ট করছেন, উনিও আছেন।
বিএপিএলসি সভাপতি বলেন, আমি নিজে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। কয় পয়সা বেতন দিয়েছি। তাহলে এখন আমাদের দায়িত্ব কী? দেশকে ফিরিয়ে দেওয়া এবং সেই কাজটি আমাদের সবাইকে করতে হবে। যে করবে না তাকে শাস্তি পেতে হবে। ছোটবেলায় দেখেছি আমাদের শিক্ষকরা রেসপেক্টেড ছিলেন, একজন ভালো ডাক্তার রেসপেক্টেড ছিলেন। আমাদের ওই সমাজে ফিরে যেতে হবে। যদি দরকার হয় সারা বাংলাদেশের বাঙালিদের রক্ত ট্রান্সফিউশন করে ফেলতে হবে। ট্রান্সফিউশন দিয়ে ঠিক করতে হবে, আমরা দুর্নীতিগ্রস্থ হব না, আমরা ভালো মানুষ হব।
বেশিরভাগ মানুষই সত্যিকার অর্থে ভালো থাকতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, অল্প কিছু ব্যক্তির দ্বারা আমরা ডিফাইনড (চিহ্নিত) হচ্ছি। এটা ঠিক না। আমরা বেশিরভাগ মানুষ সৎ থাকতে চাই। আমরা ধর্মভীরু, আমরা ভালো কাজ করতে চাই। কিছু একটা জায়গায় আমরা কেমন যেন হতবিহ্বল হয়ে যাচ্ছি। এখন সময় জেগে ওঠার। এটা আমার, আপনার সবার কাজ। অবশ্যই আমরা সবাই মিলে দেশটাকে পরিবর্তন করব। আমি এ ব্যাপারে আশাবাদী।
এমএএস/এএমএ