আহসান খান চৌধুরী
কর-ভ্যাটের হার যুক্তিযুক্ত করা হলে দেশ সুন্দরভাবে চলবে

কর-ভ্যাটের হার যুক্তিযুক্ত করা হলে দেশ সুন্দরভাবে চলবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, দেশকে এগিয়ে নিতে কর্মসংস্থান ও রাজস্ব বাড়াতে ব্যবসায়ীদের দরকার আছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানের পুলিশ প্লাজায় এমসিসিআই কনফারেন্স হলে জাগোনিউজ২৪.কম আয়োজিত ‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন আহসান খান চৌধুরী।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, অনানুষ্ঠানিকভাবে কর না বাড়িয়ে যেভাবে চলছে চলতে দিন। কনসালটেশন শুরু করুন। আমরা এনবিআরের সঙ্গে আরও বেশি আলোচনা করতে চাই। কীভাবে করজাল বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে আমরা কাজ করবো।
কেবল ‘কমপ্লায়েন্ট’ বা আইন মানা প্রতিষ্ঠানের ওপর যদি করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আগামী দিনে ভালো প্রতিষ্ঠান টিকবে না। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না, জীবনযাত্রার মান বাড়বে না। ব্যবসা-বাণিজ্য এগোবে না।
- আরও পড়ুন
- পরিবহন-বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে
- ভ্যাট-ট্যাক্সের জাঁতাকলে বিস্কুটের প্যাকেট আর কত ছোট হবে
- বর্ধিত ভ্যাট-শুল্কে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষকরা
- ভ্যাট বৈষম্য দূর করলে সরকারের টাকার অভাব হবে না
আহসান খান চৌধুরী বলেন, একটা অঙ্ক দেখেছিলাম দেশে বর্তমানে কর ও মূসক খাতে কত টাকা সংগ্রহ হচ্ছে। দেখলাম এর পরিমাণ চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে মাথাপিছু ১৭ হাজার ৯০৫ টাকা ভ্যাট-ট্যাক্স খাতে সংগ্রহ করা হয়। এটা সারা বছরে পার ক্যাপিটা হিসাব করে দেখেছি।
এনবিআরের উদ্দেশে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সিইও বলেন, আপনারা আমাদের সঙ্গে বসেন। দেশের যত চিন্তাবিদ আছেন, তাদের সঙ্গে বসে নিজেদের যোগ্যতা বলে এই ১৯ হাজার ৯০৫ টাকা পার ক্যাপিটাকে কীভাবে ইমপ্রুভ করা যায় তার জন্য আমরা সবাই সোচ্চার হবো।
‘বছরের মাঝে এসে পণ্যের ওপর কর, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর মূসক ও শুল্ক বাড়িয়ে দিলে দেশের অপকার ছাড়া কোনো উপকার করা সম্ভব হবে না’ বলে মন্তব্য করেন আহসান খান চৌধুরী।
রাজস্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবসার প্রয়োজন আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সময় এসেছে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক বাড়ানোর। আমাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে আহসান খান চৌধুরী বলেন, কেবল করের হার বাড়িয়ে করের পরিমাণ বাড়ানোর যে কল্পনায় আপনারা লিপ্ত হয়েছেন, সেই কল্পনা থেকে বেরিয়ে এসে কীভাবে কর যুক্তিসঙ্গতভাবে আদায় করা যায়, দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায় সেভাবে আমরা পরামর্শ দিতে চাই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী, অর্থনীতিবিদ ড. এম এম আকাশ, অর্থনীতিবিদ এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য রেজাউল হাসান, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি এম এ হাশেম, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, বাংলাদেশের নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন-বিকেএমইএ-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ, ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন নাসির, এসিআই ফুডসের চিফ বিজনেস অফিসার ফারিয়া ইয়াসমিন, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ও রাজীব চৌধুরী, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা ও সাবেক ব্যাংকার সাইফুল হোসেন।
জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হকের পরিচালনায় গোলটেবিল আলোচনা সঞ্চালনা করেন প্রতিষ্ঠানটির চিফ রিপোর্টার ইব্রাহীম হুসাইন অভি।
এসএম/এএসএ/এমএমএআর/জিকেএস