ভ্যাট বৈষম্য দূর করলে সরকারের টাকার অভাব হবে না

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৩৭ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গুলশানে এমসিসিআই কনফারেন্স হলে গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেন সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন/জাগো নিউজ

ব্যবসা-বাণিজ্যে ভ্যাট বৈষম্য রয়েছে। এই বৈষম্য দূর করলে সরকারের টাকার অভাব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, পাশাপাশি দুই দোকানের মধ্যে আকাশ-পাতাল ভ্যাটের বৈষম্য। সুপারশপে বাড়তি ভ্যাট, কাছেই অন্য দোকানে ভ্যাট নেই। এতে সুপারশপে বিক্রি কমেছে, স্বাচ্ছন্দ্যে আসতে পারছেন না ক্রেতা। দেশের ২০ লাখ দোকানির সিংহভাগই ভ্যাটের বাইরে। এই ভ্যাটের বৈষম্য দূর করলে সরকারের টাকার অভাব হবে না। আমরা ভ্যাট নেট বাড়ানোর দাবি জানাই।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানের পুলিশ প্লাজায় এমসিসিআই কনফারেন্স হলে জাগো নিউজ আয়োজিত ‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

মো. জাকির হেসেন বলেন, আমাদের দেশে ২০০২ সালে সুপারশপের ব্যবসা শুরু হয়। যদিও ২০০৭ সালে অনেক সুপারশপ বন্ধ করা হয়েছিল। আমাদের অনেক পরে ভারতে সুপারশপ শুরু হলেও সেখানে আমাদের চেয়ে তারা অনেক এগিয়ে রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ট্যাক্সের বোঝার কারণে সুপারশপে ক্রেতা ও বিক্রি কমেছে দাবি করে তিনি বলেন, আমরা ভ্যাট কমানোর দাবি জানাই। আমাদের দেশের মানুষ যাতে বিদেশের মতই স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারেন সুপারশপ থেকে। কিন্তু বাড়তি ভ্যাটের কারণে সুপারশপ ব্যবসাবান্ধব নেই।

ভ্যাট বৈষম্য দূর করলে সরকারের টাকার অভাব হবে না

জাকির হোসেন বলেন, যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ। যারা বিভিন্ন সময়ে টেলিভিশনে গিয়ে সরকারের সমালোচনা করেন, সরকারের বাইরে থেকে তখন সুন্দর সুন্দর কথা বলেন, যেই সরকারে যান তখন আর জনগণকে ভালো লাগে না। জুলাই-আগস্ট পরবর্তীসময়ে সরকার গঠনের পরই হঠাৎ করে ভ্যাট বাড়ানো হলো। ব্যবসায়ীরা আশাই করেনি। এটার জন্য এখন যৌক্তিক সময় নয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এফবিসিসিআইর পক্ষে প্রতিবাদ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, উপদেষ্টাদের মধ্যে তিনজন আছেন যারা অর্থনীতি বোঝেন। তাহলে এই অসময়ে ট্যাক্স বৃদ্ধি কেন তারা বুঝছেন না। বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি। বাণিজ্য উপদেষ্টার কাছে এটা নিয়ে গেলে উনি উল্টো ব্যবসায়ীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মনে হলো যত দোষ নন্দ ঘোষ, অথচ উনিও একজন ব্যবসায়ী। আমাদের বিক্রি কমে গেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জাকির হোসেন বলেন, ‘মানুষ ভ্যাট দিতে চায় কিন্তু সর্ষের মধ্যে ভূত আছে। এনবিআরে গেলে তারা ব্যবসায়ীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন। উনারা মনে হয় রাষ্ট্রের মালিক, আমরা প্রজা। চালান দেশ, যার ইচ্ছা যেভাবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী, অর্থনীতিবিদ ড. এম এম আকাশ, অর্থনীতিবিদ এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য রেজাউল হাসান, বাংলাদেশের নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন-বিকেএমইর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ, ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন নাসির, এসিআই ফুডসের চিফ বিজনেস অফিসার ফারিয়া ইয়াসমিন, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ও রাজীব চৌধুরী, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি এম এ হাশেম, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা ও সাবেক ব্যাংকার সাইফুল হোসেন।

বিজ্ঞাপন

জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হকের পরিচালনায় গোলটেবিল আলোচনা সঞ্চালনা করেন প্রতিষ্ঠানটির চিফ রিপোর্টার ইব্রাহীম হুসাইন অভি।

ইএআর/এএসএ/এমএমএআর/জিকেএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।