খেলাপি ঋণ ২৮৪৯৭৭ কোটি, ঝুঁকি বাড়ছে আর্থিক খাতে

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০১:৪৪ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

খেলাপি ঋণের কারণে দেশের আর্থিক খাত উল্লেখযোগ্য মাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেওয়া ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মোট ঋণের ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এ খাতে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বিগত সরকারের সময় আর্থিক কাজের অব্যবস্থাপনার কারণে অন্তত ১০টি ব্যাংক তীব্র ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪১ কোটি, জুনে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি, সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি, ডিসেম্বরে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

খেলাপি ঋণ ২৮৪৯৭৭ কোটি, ঝুঁকি বাড়ছে আর্থিক খাতে

২০২৩ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি, জুনে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি, সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি ও ডিসেম্বরে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।

২০২৪ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি, জুনে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি ও সেপ্টেম্বরে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সংকট উত্তরণে পদক্ষেপ নিয়ে যা বলছে প্রতিবেদন

ক্লাস ফোর্স গঠন করে ব্যাংকের ঝুঁকি ও প্রকৃত অবস্থা সঠিকভাবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নিরূপণের লক্ষ্যে এসিড কোয়ালিটি রিভিউ সম্পাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বমানের অ্যাকাউন্টিং ফার্ম এবং কে পি এম জি মোট ছয়টি ব্যাংকের অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ সম্পাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার কোয়ালিটি অ্যাসুরান্স নিশ্চিত করার জন্য একটি ফার্ম ডিলইটিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংকের সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের লুণ্ঠিত সম্পদ উদ্ধারে ব্যাংকের আইন বিভাগ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নীতিমালা জারি করা হয়েছে। সংকট উত্তরণে এবং গ্রাহকদের আস্থা অটুট রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবেদনে অধিকতর করণীয় সম্পর্কে বলা হয়, দ্রুত অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ সম্পাদন করে ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা যাচাই করা। এস এফ কোয়ালিটি রিভিউ সম্পন্ন হওয়ার পর ব্যাংকের ঝুঁকি বিবেচনায় প্রয়োজনে মার্জার ও একিউজেশনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া।
এ লক্ষ্যে ব্যাংক রেজোভেশন অর্ডিন্যান্স জারিসহ প্রয়োজনে আইন ও বিধিবিধান প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া।

বিজ্ঞাপন

অর্থ পাচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক তৎপরতা জোরদারের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এমইউ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।