ব্রোকারেজ হাউজে তালা, হদিস নেই মালিকের
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য প্রতিষ্ঠান ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের কার্যালয়ে হঠাৎ তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজটির মালিকের কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
মহামারি করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়ে এমন ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে বিও হিসাব খোলা বিনিয়োগকারীরা। তবে ডিএসইর দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বলছেন, বৈধ বিও হিসাবধারীদের পাওনা আদায়ে ডিএসই থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
২০০৬ সাল থেকে কাজ করা ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শহিদ উল্লাহ। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় প্রতিষ্ঠানটির তিনটি শাখা আছে। সবকটি শাখায় তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। কী কারণে আকস্মিক তালা ঝুলিয়ে শহিদ উল্লাহ আত্মগোপনে চলে গেছেন তার সঠিক কোনো কারণ জানা যায়নি।
তবে ডিএসইর একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়েছে। শেয়ারবাজারে মন্দা চলার কারণে তার ঋণের বোঝা ভারী হয়েছে। এ কারণেই হয় তো তিনি ব্রোকারেজ হাউজ গুটিয়ে আত্মগোপন করেছেন।
ব্রোকারেজ হাউজের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা বিপাকে পড়েছেন। তারা তাদের শেয়ার লেনদেন করার সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে তাদের টাকা আটকে রয়েছে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা বিষয়টি শোনার পর ব্রোকারেজ হাউজের কার্যালয়ে গিয়েছি। সেখানে তালা ঝুলতে দেখেছি। এই মহামারীর মধ্যে এ ধরনের ঘটনার কারণে আমাদের বিনিয়োগকারী ভাইরা চরম বিপদের মধ্যে পড়েছেন। এমনিই শেয়ারবাজারে মন্দা চলছে। প্রতিদিন পুঁজি হারাচ্ছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। এমন পরিস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনা অশনিশঙ্কেত।
এদিকে বুধবার থেকে মো. শহিদ উল্লাহর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বার বার তার বন্ধ পাওয়া যায়।
ডিএসইর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি জানার পর থেকেই ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে প্রধান কার্যালয়েসহ সব ব্রাঞ্চ অফিস বন্ধ থাকায় কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
ডিএসইর ওই কর্মকর্তা জানান, খবর পাওয়ার পর ব্রোকারেজ হাউজটির লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বৈধ বিও হিসাবধারীদের টাকা আদায়ে ডিএসই থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। আশা করা যায় তাদের পাওনা ফিরে পেতে সমস্যা হবে না। সিডিবিএলের কাছে শেয়ার জমা আছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিএসইর পরিচালক মো. শাকিল রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে কী কারণে এমনটি ঘটেছে তা আমরা জানি না। তবে ব্রোকারেজ হাউজটিতে বৈধ বিও হিসাবধারীদের পাওনা ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না বলে আমরা আশা করছি। ডিএসইতে থেকে বৈধ বিও বিনিয়োগকারীদের পাওনা আদায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানার পর পরই আমরা তদন্ত শুরু করেছি।
এমএএস/এনএফ/এমএস