কিশোরগঞ্জ
চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

কিশোরগঞ্জে চিকিৎসায় অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) শহরের দি ল্যাব এইড জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের নাম ডা. তাবাসসুম ফেরদৌস। তিনি ওই হাসপাতালের স্ত্রী রোগের চিকিৎসক ও সার্জন।
অপরদিকে ভুক্তভোগীর নাম আকলিমা আক্তার (৩২)। তিনি সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের কলাপাড়া এলাকার সবজি ব্যবসায়ী আলম হাসানের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার বেলা ১১টায় সন্তান প্রসবের জন্য আকলিমা আক্তারকে হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। এসময় রোগীকে জরুরি সিজারের কথা বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। সিজারের মাধ্যমে দুপুর ১টায় সন্তানের জন্ম দেয় তিনি। সিজারের পর কোনোভাবে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে চিকিৎসক আকলিমাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সেখানে মারা যান আকলিমা।
নিহতের স্বামী আলম হাসান বলেন, রোগীর চতুর্থ সিজার বলার পরও চিকিৎসক ও হাসপাতালের লোকজন গুরুত্ব দেয়নি। তারা পারবে না এ বিষয়টি আমাদের বলেনি। তাদের অবহেলার কারণে আমার স্ত্রী রক্তক্ষরণে মারা গেছেন। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক হারুণ অর রশিদ বলেন, ভর্তি হওয়ার পর রোগীর সব ধরনের পরীক্ষা করা হয়। আমাদের কোনো সমস্যা নাই। সব কাগজপত্রও ঠিক আছে। চিকিৎসকের কোনো সমস্যা নাই। অপারেশন করলে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক।
এদিকে অভিযোগ ওঠে ডা. তাবাসসুম ফেরদৌস নামের পাশে মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করেন। সিজার করার মতো ডিগ্রি অর্জন করেননি তিনি। তার পদবীর সঙ্গে তিনি অনারারী মেডিকেল অফিসার শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল লিখেন। অথচ ওই হাসপাতালে এ পদে কেউ কর্মরত নেই।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার বলেন, এ নামে কোনো চিকিৎসক এখানে কর্মরত নেই। প্রতারণা করে এমন তথ্য ব্যবহার করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ডা. তাবাসসুম সিজারে অনভিজ্ঞ ও অনুমোদন প্রাপ্ত নয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডা. তাবাসসুম ফেরদৌসের ভিজিটিং কার্ডে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি অফিসের কাজে ঢাকা রয়েছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আকলিমা আক্তার মারা যাওয়ার বিষয়টি জানার পর বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসকে রাসেল/আরএইচ/জেআইএম