মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় মাকসুদা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০১:৫০ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

দরিদ্র পরিবারের সন্তান মাকসুদা আল বারী মিম সফল হয়েছেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায়। মেধাতালিকায় ৩৩১১তম হয়ে সুযোগ পেয়েছেন দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার। তার চোখে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও কপালে ভর্তি ও পড়াশোর ব্যয় নিয়ে চিন্তার ভাজ।

মাকসুদার বাড়ি লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে। মাকসুদার বাবা মিজানুর রহমান পেশায় রাজমিস্ত্রি। মা আরিফা আক্তার রিনা মাঝেমধ্যে অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। পরিবারের তিন বোনের মধ্যে মাকসুদা বড়।

বিজ্ঞাপন

মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েও দুশ্চিন্তায় মাকসুদা

মাকসুদার মেডিকলে পড়ার সুযোগে আনন্দিত হলেও ভর্তি ও পড়াশোনার ব্যয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবারটি। তারা মেধাবী মেয়েটির ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মাকসুদা আল বারী মিম ২০২২ সালে লালমনিরহাট সদরের মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২৪ সালে একই ইউনিয়নের দুড়ারকুঠি বেগম কামরুননেছা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। স্কুল ও কলেজে বেতন ও টিউশন ফি ছাড়াই মাকসুদাকে পড়ান শিক্ষকরা। পাশাপাশি নবম শ্রেণি থেকে টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ মেটাতেন তিনি।

পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, মাকসুদার বাবা কখনো রাজমিস্ত্রি আবার কখনো কৃষিকাজ করেন। ৮ শতকের বসতভিটা আর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১১ শতাংশ জমিই তার সম্পদ। একটি গাভীর দুধ বিক্রি করে ও বর্গা নেওয়া দুই বিঘা জমিতে আবাদ করে কোনোরকমে সংসার চালান মিজানুর ও আরিফা দম্পতি। মাকসুদার ছোট দুই বোনের একজন উচ্চমাধ্যমিকে ও অন্যজন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে।

মাকসুদার বাবা মিজানুর রহমান জানান, মেয়েদের পড়াশোনার খরচ ঠিকমতো দিতে পারেন না তিনি। বড় দুই মেয়ে টিউশনি করে পড়ার খরচ জোগাড় করে। বড় মেয়ে মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেও তাকে কীভাবে সেখানে ভর্তি করাবেন ও পড়ার খরচ দেবেন, এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

jagonews24

মাকসুদা আল বারী মিম বলেন, ছোট বেলা থেকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। অনেক বাধা পেরিয়ে এই পর্যন্ত এসেছি। আমার বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন আর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। আমি আর আমার বোন টিউশনি করে চলছি। টিউশনি করে এতদিন নিজের খরচ চালিয়েছি। কিন্তু মেডিকেলে পড়ার খরচ জুটবে কীভাবে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

ফুলগাছ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আলী বলেন, মাকসুদা মেধাবী শিক্ষার্থী। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সে তার মেধার প্রমাণ দিয়েছে। কিন্তু তার পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। সমাজের সামর্থবানদের এগিয়ে এলে মাকসুদা তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। একদিন চিকিৎসক হয়ে দেশের মানুষকে চিকিৎসা দিতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক রকি হায়দার বলেন, মাকসুদা আল বারী মিম মেডিকেলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি আমরা জেনে তাকে নগদ অর্থ প্রদান করেছি। পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

রবিউল হাসান/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।