সপ্তাহের ব্যবধানে আগাম আলুতে ১২০০ টাকা হাওয়া
‘গত বছর লাভ পেয়ে এবার ছয় বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৩৪ হাজার ৮০০ টাকা। রোববার (১২ জানুয়ারি) এক বিঘা জমি থেকে ৪৩ মণ আলু পেয়েছি। ৮০০ টাকা মণ দরে দাম পেয়েছি ৩৪ হাজার ৪০০ টাকা। এতে ৪০০ টাকা লোকসান হয়েছে।’
কথাগুলো বলছিলেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার গঙ্গাদাসপুর গ্রামের কৃষক আলাল উদ্দিন। আলালের মতো জেলার অনেক কৃষক আগাম আলু চাষ করে প্রথমে কিছুটা লাভবান হলেও এখন লোকসানে পড়েছেন।
আলুচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লাভের আশায় এবারো চাষিরা নানা জাতের আলুর আগাম চাষ করেছেন। প্রতিবছর অক্টোবরের দিকে আলু রোপণ করে ডিসেম্বর ও জানুয়ারির দিকে বাজারে বিক্রি করেন তারা। গত সপ্তাহে যে আলু ২০০০ টাকা মণে বিক্রি হয়েছে সেটা এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে ১২০০ টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।
এ মৌসুমে জেলায় ৪৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে বলে জানিয়েছে জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার হেলকুন্ডা এলাকার কৃষক মজিদ মন্ডল জাগো নিউজকে বলেন, দুই বিঘা জমিতে আগাম আলু আবাদে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকার বেশি। কয়েকদিন আগে এক বিঘা জমির আলু এক হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। বাকি এক বিঘা আলু রয়েছে। এখন আলুর দাম ৭৮০-৮০০ টাকা মণ। এই দামে আগাম আলু বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না।
সদর উপজেলার জলাটুল গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমি চার বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছি। এরমধ্যে দুই বিঘার আলুর বিক্রি করেছি। তখন অল্প কিছু লাভ হয়েছে। কিন্তু এখন ক্রেতার অভাবে বিক্রি করতে পারছি না। আগাম আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা যায় না, এজন্য আলু রেখে দেওয়ারও উপায় নেই।
কৃষকের মাঠ ঘুরে ঘুরে আলু কেনেন ব্যবসায়ী শাবু মিয়া। তিনি বলেন, এবার মৌসুমের শুরুতে তিন হাজার টাকা মণ দরেও আলু কিনেছি। গত সপ্তাহেও মাঠ থেকে এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকায় আলু কিনেছি। এখন কিনছি ৭০০-৮০০ টাকায়।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এক কৃষক একটি ফসলে লাভ পেলে অন্যরাও সেটাতে ঝোঁকেন। এবার আলুর ক্ষেত্রে এমনটি হয়েছে। উৎপাদন খরচও বেশি পড়ছে, কিন্তু বাজারে দাম কম। এতে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
আল মামুন/এফএ/এমএস