মাদারীপুর

কাজে আসছে না আবহাওয়া পূর্বাভাসের বোর্ড

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ১২:৪১ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

মাদারীপুরে বিভিন্ন ইউনিয়নে বসানো রেইনগজ মিটার (কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস বোর্ড) কোনো কাজেই আসছে না কৃষকদের। বেশির ভাগই অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আবার কোথাও কোথাও মিটার চুরি হয়ে গেছে। ফলে কৃষকরা আগাম তিনদিনের আবহাওয়ার বার্তা সর্ম্পকে জানতে পারছেন না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

কৃষি অফিস, কৃষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে মাদারীপুর জেলার ৬০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৬টি ইউনিয়নে এই যন্ত্র বসানো হয়। তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, ঝড়ের পূর্বাভাস, আলোকঘণ্টাসহ ১০টি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও তা কৃষকদের মাঝে প্রকাশের জন্য ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কাজেই আসেনি আবহাওয়া পূর্বাভাসের বোর্ড

বর্তমানে সব যন্ত্রই বিকল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও উধাও হয়ে গেছে মিটার। এছাড়া রেইনগজ মিটার দেখাশোনা ও সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য প্রত্যেক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে একটি করে ট্যাব, প্রিন্টার, সিম কার্ড ও মডেম দেওয়া হলেও যার অধিকাংশের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

এদিকে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগই কৃষক জানেন না এই যন্ত্র সর্ম্পকে।

মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের দেওয়ালে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যন্ত্রটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এটি যারা স্থাপন করেছেন, তারাই বলতে পারবেন আসলে এর কি উপকারিতা আছে। আমরা এ সর্ম্পকে কিছু বলতে পারবো না।

মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু তালেব বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ছাদে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যন্ত্রটির কিছু অংশ অনেক আগেই চুরি হয়ে গেছে। বাকি অংশ দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। এতে কৃষকদের কোনো উপকারই হয়নি।

মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, আমরা কোনো দিনও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আবহাওয়ার তথ্য পাইনি। এই তথ্য পেলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো। ফসল ফলাতে কাজে আসতো। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদে আবহাওয়ার পূর্বাভাস যন্ত্র আছে সেটি আমাদের জানা নেই। এই যন্ত্রের কাজ কি তাও জানি না।

কাজেই আসেনি আবহাওয়া পূর্বাভাসের বোর্ড

মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. মোতাহার মিয়া বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার জন্য রেইনগজ মিটার কি, তা আমরা জানি না। এটা দিয়ে কি কাজ হয়, তাও জানি না। কবে বসিয়েছে, এই সর্ম্পকে কিছুই ধারণা নেই আমাদের। তবে আগে থেকে আবহওয়া সর্ম্পকে জানতে পারলে আমাদের উপকার হতো। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারতাম।

মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সন্তোষ চন্দ চন্দ্র বলেন, এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই অনেক স্থানে এর ব্যবহার হচ্ছে না। এছাড়া অচল যন্ত্রগুলো সচল করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।