আগে বিচার-সংস্কার, তারপর নির্বাচন: হাসনাত আব্দুল্লাহ
বিচার ও সংস্কার করার পর নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবশ্যই একটি যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন হবে। তবে তার আগে খুনি হাসিনার বিচার ও এই দেশের সিস্টেমগুলো সংস্কার করতে হবে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় ফরিদপুর শহরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, গত দেড় দশক ধরে খুনি হাসিনা আমাদের দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ভেঙে দিয়েছেন। দেশটাকে নেতৃত্বশূন্যতার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। আমাদের পূর্বতন যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব রয়েছে, তাদের বিভাজনের কারণে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেননি, তারা ব্যর্থ হয়েছেন। তারা যেখানে ব্যর্থ হয়েছেন, ঠিক সেই জায়গাতেই আমাদের তরুণ প্রজন্মকে হাল ধরতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই দেশের মানুষের জীবনের দিকে আর যদি কোনো শকুন দৃষ্টি দেয়, তাহলে তার চোখ উপড়ে ফেলবো। হোক সে দেশের ভেতরের শক্তি অথবা বাইরের শক্তি। আমরা আমাদের শহীদ ভাইদের হত্যার বিচার চাই। শেখ হাসিনা দেশে আসবেন, তবে তিনি দেশে এসে সরাসরি বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন, ওই কাঠগড়া থেকে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াবেন।
দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ আর কোনো নতজানু পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা চোখে চোখ রেখে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করবো। পৃথিবীর কোনো শক্তি যদি আমাদের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের চেষ্টা করে তাহলে সেই পররাষ্ট্রনীতি ছুঁড়ে ফেলবো।
তিনি বলেন, ৬ আগস্টের পর আজ পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান বিচার আমরা দেখতে পাইনি। ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় নাই। ২০১৪ সালের শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় নাই। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে যেভাবে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে সেগুলোর এখন পর্যন্ত কোনো বিচার হয় নাই।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, যদি এই সরকার আমাদের কাজকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, তাহলে অবশ্যই বিচারগুলোকে সম্পন্ন করতে হবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দেখি বিদ্রোহ করা হয়, সচিবালয়ে আগুন লাগানো হয়। আপনাদের বলি, রিয়েলিটি মাইনা নেন। ছাত্রসমাজ যতদিন জেগে আছে, ততদিন এই খুনি শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমরা একটি জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দিয়েছি। সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি থাকতে হবে। এই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। সেই ঘোষণাপত্রে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের কথা স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ হাসানের সঞ্চালনায় ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য দেন সোহেল রানা। আরও বক্তব্য দেন হাসিব-আল ইসলাম, রিফাত রশীদ, আশরেফা, রাজেন্দ্র কলেজ শাখার প্রধান কাজী রিয়াজ, ফারহান আহসান অর্ণব, নাবিলা তালুকদার, তাহসিন হাসান দ্বীন, মাহমুদুল হাসান ওয়ালিদ, সানজিদা রহমান সমতা, জেবা তাহসিন, শাহ মো. আরাফাত প্রমুখ।
এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/জিকেএস