আ’লীগের আমলে নিয়োগ পাওয়া টাঙ্গাইল মেডিকেলের ১৫ জনকে অব্যাহতি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৮:২৭ পিএম, ০২ জানুয়ারি ২০২৫

টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত বিভিন্ন পদের ১৫ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ওই কর্মচারীরা ২০২২ সালে হাসপাতালটিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তবে অব্যাহতির বিষয়ে অবগত নয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল কুদ্দুস।

কর্মচারীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়ায় চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের নিয়োগের শর্তানুযায়ী ১৬ হাজার ১৩০ টাকা বেতনের মধ্যে দেওয়া হত ১০ হাজার টাকা। সর্বশেষ গত পাঁচ মাস ১২ হাজার টাকা করে দিয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে কর্মরত ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট, ওয়ার্ড বয়, ইলেট্রিশিয়ান, বাবুর্চি ও নিরাপত্তা প্রহরী পদের ১৫ জনকে অব্যাহতি দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাছরাঙা সিকিউরিটি সার্ভিসেস।

অব্যাহত দেওয়া ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, টাঙ্গাইল মেডিকেল হাসপাতালের প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন পদবির ৯০জন জনবল সরবরাহ করা নিম্নে বর্ণিত পদবির ১৫ জনকে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও মিটিং মিছিলের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের নিয়োগপত্র বাতিল করা হইল।

অব্যাহতি পাওয়া কর্মচারীরা জানান, আওয়ামী লীগের নেতাদের মাধ্যমে হাসপাতালে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় নিয়োগ পাওয়া এখনও অনেকেই কর্মরত রয়েছেন। শুধু আমাদের ১৫ জনকে অব্যাহতির চিঠি দেওয়া হয়েছে। অথচ কেউ কোনো দল বা মিছিল মিটিং করেনি কোনো খারাপ রেকর্ডও নেই। পর্যায়ক্রমে নিয়োগ পাওয়া ৯০ জন চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হবে শুনেছি। পরে নতুন করে অন্যদলের লোকজন নিয়োগ দিবে। বর্তমানে বিএনপির দুই নেতা হাসপাতালে লোকবল নিয়োগের জন্য দায়িত্ব পেয়েছেন বলে শুনেছি। অব্যাহতি পাওয়া কয়েকজন চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য ওই বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

অব্যাহতি পাওয়া ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট পাপিয়া আক্তার জানান, কর্মচারীদের একটি গ্রুপে অব্যাহতির ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। পরে সুপার ভাইজার গ্রুপে অব্যাহতি পাওয়া ১৫ জনকে হাসপাতালে আসতে নিষেধ করেন। আওয়ামী লীগের সময় নিয়োগ পাওয়ায় নাকি আমাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমরাতো কোনো দল করি না। কোনো কারণ ছাড়া এমন চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

ওয়ার্ড বয় মেরিনা জানান, ছয়মাসের বেতন বকেয়া ছিল। কোম্পানি পাঁচ মাসের বেতন পরিশোধ করেছে। প্রথমে ১০ হাজার করে বেতন দিতো কিন্তু অব্যাহতি দেওয়ার আগে দুই হাজার টাকা বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা করে বেতন দিয়েছে। অথচ শর্তানুযায়ী বেতন দেওয়ার কথা ছিল ১৬ হাজার ১৩০ টাকা করে।

টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ভাইজার আল আমিন জানান, অব্যাহতি পাওয়া কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে মিছিল মিটিং করা, চাকরির কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে প্রতিষ্ঠান তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাছরাঙা সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজার মো. জিলান জানান, অব্যাহতি পাওয়া কর্মচারীরা আওয়ামী লীগের সময় রাজনৈতিক প্রোগ্রামে মিছিল মিটিং করেছে। সুপারভাইজারের দেওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা, আব্দুল কুদ্দুস বলেন, চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। এছাড়া অব্যাহতির কোনো চিঠি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়নি।

আরিফ উর রহমান টগর/আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।