সড়কের কাজ না করে পালালেন ঠিকাদার, জনদুর্ভোগ চরমে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪:০৬ পিএম, ০১ জানুয়ারি ২০২৫

গত বছরের ১৩ মার্চ কাজ শুরু করে। সেই কাজের সময় শেষ হয়েছে ৩১ মে। আংশিক কাজ করার পর খোঁজ মিলছে না ঠিকাদারের। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি গাঢাকা দেওয়ায় সড়কের উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে।

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বাঠইমুড়ি বাজার ভায়া বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪৮৫০ মিটার রাস্তা সিসি দ্বারা উন্নয়নের জন্য ৫ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৭ টাকায় চুক্তি হয় এপেক্স এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

জানা যায়, ঘিওর উপজেলার পরিষদে যাতায়াতের জন্য হরিরামপুর উপজেলা, ঘিওর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন ও প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদ সড়কটি। দীর্ঘদিন কাঁচা সড়ক থাকার পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সিসি দ্বারা উন্নয়নের চুক্তি হয় ‘এপেক্স এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

প্রতিষ্ঠানটি মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেলের।

তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে রাস্তার কাজ ধরেন। রাস্তা খোঁড়া শুরু করে একটি বিল উত্তোলন করে রাস্তার পাশে থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলন করে খোয়া বিছানোর কাজ শুরু করেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরই গাঢাকা দেন সুলতানুল আজম খান।

সড়কের কাজ না করে পালালেন ঠিকাদার, জনদুর্ভোগ চরমে

এতে রাস্তা খোঁড়া ও বালু থাকার কারণে চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এলাকাটি কৃষিপ্রধান হওয়ায় সবচেয়ে বেশি কৃষিপণ্য উৎপাদিত হয় এ অঞ্চলে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বেহাল থাকায় কৃষকরা তাদের ফসল দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে সময়মতো পাঠাতে পারছেন না। বেড়েছে পরিবহন খরচ।

পথচারী সবুজ সরকার বলেন, সড়কের কাজ দেখে ভাবছিলাম আমাদের কষ্টের দিন শেষ হবে। এখন দেখছি আগের কাঁচা রাস্তাই ভালো ছিল। তবুও এমন ধুলো উড়ত না। ধুলাবালিতে শরীর মেখে যাচ্ছে ও জামা কাপড় নষ্ট হচ্ছে। স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীদের কষ্টের শেষ নেই।

তাড়াইল এলাকার শামীম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালির কারণে গ্রামের মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। আগে রাস্তা দিয়ে হেঁটে বা রিকশা করে বাজারে যেতে পারতাম। এখন বালুর কারণে এ রাস্তা দিয়ে হাঁটাই কষ্ট।

একই গ্রামের ফারুক বলেন, রাস্তার কাজ শেষ হলে আমাদের জীবনের মান উন্নত হতো। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। তারা উৎপাদিত ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাজারজাত করেন। রাস্তার এই অবস্থা হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এপেক্স এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সুলতানুল আজম খান আপেল আত্মগোপনে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহেনুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সময় বাড়ানো হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, আগামী এক দু-দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবেন।

মো. সজল আলী/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।