থার্টি ফার্স্ট নাইট
হাঁসের ব্যাপক চাহিদা, কেজিতে দাম বেড়েছে ৫০০-৯০০ টাকা
থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষকে ঘিরে দিনাজপুরে হাঁসের চাহিদা এখন তুঙ্গে। ৫০০ টাকা বেড়ে প্রতি জোড়া পাতিহাঁস বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকায়। আর ৮০০-৯০০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে রাজহাঁস। ক্রেতাদের বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজারে গিয়ে হাঁস কেনার এই দৃশ্য চোখে পড়ে।
গত কয়েকদিন ধরে গ্রামের বিভিন্ন হাটবাজার থেকে সংগ্রহ করে রাখা হাঁস সকাল থেকেই বাজারে তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি জোড়া পাতিহাঁসের দাম ৫০০ টাকা বেড়ে ১৩০০ টাকা এবং রাজহাঁসের দাম ৭০০ বেড়ে প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে ২৮০০-৩০০০ টাকায়। এছাড়া এক জোড়া পাতিহাঁস পরিষ্কার করতে ১৫০ টাকা ও একটি রাজহাঁসে ২০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এর আগে পাতিহাঁস বিক্রি হয়েছে ৮০০-৯০০ টাকা জোড়া।
এদিকে সব ধরনের মুরগি দাম কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর গরুর মাংস কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা।
সরেজমিন দেখা গেছে, থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষকে ঘিরে গতবছরের তুলনায় এবার বেশি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। পিকনিক হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। আর সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন হাঁস-মুরগি ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকেই সাজিয়ে বসেছেন দোকান। দিনাজপুর শহরের প্রতিটি বাজারে হাঁস-মুরগির বাজারে দেখা যায়, পাতিহাঁস ও রাজহাঁসের ব্যাপক আমদানি। গরু-মহিষও জবাই হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ।
সদর উপজেলার শহরতলির সাপ্তাহিক হাট পাঁচবাড়ী হাটে পাতিহাঁসের আমদানি ছিল চোখেপড়ার মতো। সার ব্যবসায়ী মোকাররম হোসেন বলেন, ‘সকালে হাটে হাঁসের চাহিদা ছিল ব্যাপক। অনেকে দামাদাম করতে গিয়ে হাঁস কিনতে পারেননি। ১৩০০-১৫০০ টাকা জোড়া পাতিহাঁস বিক্রি হচ্ছে।’
বাহাদুর বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী বিপ্লব ইসলাম বলেন, ‘সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) থেকে মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা। হাঁসের আমদানিও হয়েছে ব্যাপক। দামও চড়া। আজ মূলত হাঁসের ক্রেতা টিনেজাররা। তারা রাতে পিকনিকের জন্য হাঁস কিনে বানিয়ে (পরিষ্কার করে) নিয়ে যাচ্ছেন।’
নিউটান বাজারে মুরগির ব্যবসা করেন আমজাদ হোসেন। তিনি গ্রামের হাট-বাজার থেকে হাঁস কিনে বাজারে পাইকারি বিক্রি করেন। আজ লাভের আশায় পাইকারি বিক্রির পাশাপাশি খুচরাও বিক্রি করছেন।
আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এখন সবাই সচেতন। গ্রামেও শীতে পিকনিক, থার্টি ফার্স্ট নাইট, ইসলামি জলসায় হাঁসের চাহিদা বাড়ে। বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। হাত বদলে একেকটি পাতিহাঁসের দাম ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রাজহাঁসের দাম বেড়েছে প্রতিপিস ৮০০-৯০০ টাকা।’
উপশহরের সাবিনা ইয়াসমিন হাঁস কিনতে এসেছেন বাহাদুর বাজারে। তিনি বলেন, ‘হাঁসের দাম অনেক বেশি। আবার বানিয়ে নিতে হচ্ছে টাকা দিয়ে। এতে করে একজোড়া হাঁস নিতে খরচ পড়ছে ১৪০০-১৫০০ টাকা।’
বালুবাড়ী থেকে হাঁস কিনতে আসা তরুণ রায় বলেন, ‘আমরা পিকনিক করবো হাঁস ও মুরগি দিয়ে। হাঁস কিনলাম ১৩৫০ টাকা জোড়া। আর পাকিস্তানি মুরগি ২০-৩০ টাকা বেশি দামে কিনতে হয়েছে।’
গরুর মাংস কিনতে এসেছিলেন বালুয়াডাঙ্গা মহল্লার থেকে মজিবর রহমান। তিনি বলেন, বাহাদুর বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা আজকের দিনে তো চোর থেকে ডাকাতে পরিণত হয়েছেন। ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি করছেন।
মাংস ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, গরুর দাম বেশি তাই ৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। তবে অনেকে দামাদামি করে মাংস কিনছেন।
এমদাদুল হক মিলন/এসআর/এমএস