রাজশাহীতে নারী চিকিৎসককে বাসা থেকে অপহরণ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: ০৮:১৫ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
তুলে নেওয়ার সময় ভুক্তভোগীর মায়ের মাথায় আঘাত করেন অপহরণকারীরা

রাজশাহীতে এক নারী চিকিৎসককে (২৬) বাসা থেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওইসময় তার মাকে দেওয়ালে মাথা ঠুকে আহত করা হয়েছে। নারী চিকিৎসকের সঙ্গে তার বাবাকেও তুলে নেওয়া হয়েছিল। পথে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় তাকে ফেলে গেছেন অপহরণকারীরা। পরে ভুক্তভোগী চিকিৎসকের বাবাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে নগরের চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় এই অপহরণের ঘটনা ঘটে।

অপহৃত চিকিৎসক রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ থেকে সবেমাত্র ডেন্টাল বিডিএস শেষ করেছেন। তার বাবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই নারী চিকিৎসকের বাবা রাজশাহীতে ফিরে আসেননি। তবে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, বিকেল ৪টার দিকে ভুক্তভোগী ওই চিকিৎসকের কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন এসে তার বাবাকে রাজশাহীর উদ্দেশে নিয়ে গেছে।

অপহরণের শিকার চিকিৎসকের মাকে (৫১) গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালেই কথা হয় তার সঙ্গে।

তিনি জানান, ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য তার স্বামী মসজিদে যান। এসময় তিনি বাইরের ফটকে তালা লাগিয়ে চাবি সঙ্গে নিয়ে যান। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর অপহরণকারীরা তার স্বামীকে জিম্মি করে। তারা চাবি নিয়ে এসে বাইরের ফটক খুলে ভেতরে ঢোকেন।

এসময় অপহরণকারীরা চিকিৎসকের মাকে ধরে দেওয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেন। তার মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করেন। এরপর তারা তাকে বিছানায় ফেলে গলা চেপে ধরেন। তিনি পড়ে গেলে বাবা-মেয়েকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান অপহরণকারীরা। অপহরণকারীরা চলে যাওয়ার পর খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন এসে আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

অপহরণের শিকার চিকিৎসকের মা জানান, তার স্বামীর সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, মাইক্রোবাসে চালকসহ অপহরণকারীরা ছয়জন ছিলেন। তাকে তোলার পরেই মুখ বেঁধে ইনজেকশন পুশ করা হয়। তার চেতনা ফিরে এলে তাকে মহাসড়কের পাশে ফেলে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে সলঙ্গা থানার ওসি এনামুল হক বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে সলঙ্গা থানার ভেংড়ি এলাকার লোকজন অপহরণের শিকার চিকিৎসকের বাবাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। বিকেল ৪টার দিকে স্বজনরা এসে তাকে নিয়ে গেছেন।’

রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘অপহরণের মূলহোতা হিসেবে তারা তানভীর খান তাজ রওশন আলম নামের একজনের নাম পেয়েছেন। কেউ বলছেন, ওই ছেলের সঙ্গে নারী চিকিৎসকের বিয়ে হয়েছিল। কেউ বলছেন, বিয়ে হয়নি। তার নেতৃত্বেই ওই চিকিৎসককে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে পরিবার বলছে।’

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ওই চিকিৎসকের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় পরিবার মামলা করতে চায়। এজাহার দিলে মামলা রেকর্ড করা হবে।

সাখাওয়াত হোসেন/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।