গোপালগঞ্জে ‘চাঁদা নিয়ে’ কেন্দ্র থেকে প্রেশারে ছাত্রদল সভাপতি
বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধনের কথা বলে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মিকাইল হোসেনের বিরুদ্ধে। চাঁদার ওই টাকা চেকের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ওই ছাত্রদল নেতা।
জানা গেছে, গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে নেতাকর্মীদের নিয়ে গোপালগঞ্জ সদরের গোলাবাড়ীয়ায় অবস্থিত মুন্সি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ভাঙারির কারখানায় গিয়ে মালিককে বিভিন্ন হুমকি দেন ছাত্রদল নেতা মিকাইল হোসেন। পরে ওই ব্যবসায়ীর কাছে বিএনপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধনের কথা বলে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ওই ছাত্রদল নেতা। চাঁদা না দিলে ব্যবসা চালাতে দেবেন না বলেও হুমকি দেন। পরে চেকের মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ী এক লাখ টাকা চাঁদা দেন ওই ছাত্রদল নেতাকে।
এরপর বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ী। পরে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর কাছে বাধ্য হয়ে ক্ষমা চান ওই ছাত্রদল নেতা।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক জেলা ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, মিকাইল ভাই সদরের গোলাবাড়িয়া এলাকার মুন্সি এন্টারপ্রাইজের মালিক চানমিয়ার কাছ থেকে চেকের মাধ্যমে এক লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী বিএনপির কেন্দ্রীয় থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজনের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছেন।
মুন্সি এন্টারপ্রাইজের মালিক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী চানমিয়া বলেন, এ ঘটনায় সে আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আমরাও মাফ করে দিয়েছি। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না।
মুন্সি এন্টারপ্রাইজের পার্টনার সাইফুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ওই দিন ১০-১৫টা মোটরসাইকেল নিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি মিকাইল হোসেন আমাদের কারখানার সামনে আসেন। এসেই তিনি নানা হুমকি ধামকি দেওয়া শুরু করেন। পরে কার্যালয় উদ্বোধন করার কথা বলে একটা অঙ্ক চান। আমাদের কাছে যা চেয়েছে তাই দিয়েছি। কিন্তু পরে এটা আমি বিএনপির ওপরের নেতাদের কাছে বললে তিনি উল্টো আমার হাত-পা ধরা শুরু করেন। আমরা তাকে মাফ করে দিয়েছি। এটা নিয়ে আমাদের আর অভিযোগ নেই।
গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মিকাইল হোসেন বলেন, ‘চানমিয়া মোল্লা হয়ে কীভাবে মুন্সি নাম দেয়। যতদূর জানি ওই ব্যবসায়ী সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির ভাগনে। ওইদিন আমাকে পোলাপান ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়, পরে সেখানে আমি যাই। গিয়ে একটু হুমকি ধামকি দিছি। এটা তো স্বাভাবিক, বোঝেনই। পরে সেখান থেকে চলে আসছি। তবে ওদের লবিং অনেক ওপরে। সেন্ট্রাল থেকে আমাকে ফোন দিয়ে প্রেশার দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেক ঝামেলায় আছি।’
চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘এমন কিছু না। সে আমার এলাকার অনেককেই চুরির মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে। সে এইখানে এসে কারখানা দিয়েছে। এতটাকা সে কোথায় পাইছে। এইগুলা জানতে চাইছি, তা নিয়ে অনেক ঝামেলা হইছে। পরে সেখানে পুলিশও গেছিল।’
আশিক জামান অভি/এফএ/জিকেএস