স্ত্রী-সন্তান গোপন রেখে বিয়ে, বদলি হয়েই পল্টি এএসআইয়ের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ১০:১৫ এএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

স্ত্রী-সন্তান থাকতেও কলেজছাত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি অন্য থানায় বদলি হয়ে যাওয়ার পরই ওই কলেজছাত্রীকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করেন জাহাঙ্গীর। টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানা থেকে বদলি হয়ে বর্তমানে ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানায় কর্মরত রয়েছেন তিনি।

চলতি বছরের ৬ জুন ১৫ লাখ টাকার দেনমোহরে ঢাকার রায় সাহেব বাজারের কাজী মাওলানা মো. সাদেক উল্যাহ ভুইয়া তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করেন।

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের রাজাখানের মেয়ে ও করটিয়া সাদত কলেজের শিক্ষার্থী রিয়া আক্তারকে বিয়ে করেন তৎকালীন নাগরপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই- বিপি নং- ৮৩০/৩০৯১৭৬২) ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বলদিঘাট এলাকার সাহাব উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। এ ঘটনায় টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার, ফরিদপুর পুলিশ সুপার ও নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি ওই তরুণী। পরে টাঙ্গাইল আদালতে যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি। এছাড়া ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর আলাদা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, দেলদুয়ার থানায় একটি মামলার তদন্ত করতে দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইলে ওই তরুণীর বাড়িতে যান এএসআই জাহাঙ্গীর আলম। ওই সময় তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে। বিভিন্ন কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে ঢাকায় একটি কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন তারা। এরপর থেকেই তারা একসঙ্গে বসবাস করেন। পরবর্তীতে নাগরপুর থানা থেকে ফরিদপুরে বদলি হওয়ার পর থেকে যোগাযোগ করছেন না জাহাঙ্গীর। তাদের বাড়িতেও নিচ্ছেন না। পরে জানতে পারেন জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ও দুইজন সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তাকে তালাক দেওয়ার জন্য মোবাইলে বারবার প্রাণনাশ ও মামলার ভয় দেখাচ্ছেন জাহাঙ্গীর।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিয়া আক্তার জানান, প্রেমের ফাঁদে ফেলে এবং তথ্য গোপন করে বিয়ে করেছে জাহাঙ্গীর। বিয়ের পর একসঙ্গেই ছিলাম কয়েক মাস। ৫ আগস্টের পর অন্যত্র বদলি হওয়ার পরই তার আরেক বিয়ের তথ্য পাই। বদলি হওয়ার পর থেকেই আমার কোনো খোঁজখবর নেয় না। তার স্ত্রী ও সন্তান থাকার পরও প্রতারণা করে আমার জীবন নষ্ট করেছে। আমি তার সঙ্গে সংসার ও স্ত্রীর মর্যাদা চাই।

অভিযুক্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কাজী অফিসে বিয়ে করেছি। আইনিভাবে বিষয়টির সমাধান হবে।

ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সফর আলী বলেন, রিয়া নামের ওই নারী থানায় এসেছিলেন। জাহাঙ্গীর তাকে নিয়ে সংসার করবে না বলে জানিয়েছেন। তবে ওই নারী কোনো অভিযোগ দেননি। টাঙ্গাইলে মামলা হওয়ার বিষয়ে কিছু জানা নেই।

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম জসীম উদ্দিন বলেন, এএসআই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাকে নাগরপুর থেকে বদলি করা হয়েছে। বদলি হওয়ার পরই জানতে পারি তিনি রিয়া নামের একজনকে বিয়ে করেছেন। যেহেতু নাগরপুর থানায় তিনি কর্মরত নেই, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না।

আরিফ উর রহমান টগর/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।