যশোর

আ’লীগের ১২৫ নেতাকর্মীর জামিন না মঞ্জুর, আদালত চত্বরে হট্টগোল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৮:৩৬ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

যশোরে নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী লীগের ১৬৭ নেতাকর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। রোববার (২২ ডিসেম্বর) চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কারাগারে পাঠানোর সময় নেতাকর্মীরা শ্লোগানে আদালত প্রাঙ্গণ উত্তাল করে তোলেন

এদের মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ২০ জন, অভয়নগরে ১০৫ ও কেশবপুরের ৪২ জন। একই সঙ্গে কেশবপুর উপজেলার ৪২ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন জানান, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান- মেম্বার, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

আ’লীগের ১২৫ নেতাকর্মীর জামিন না মঞ্জুর, আদালত চত্বরে হট্টগোল

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রে বোমাবাজির ঘটনায় ১৯ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন অ্যাডভোকেট মুন্সী মঞ্জুরুল ইসলাম। এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনসহ ৯৬ জন। রোববার চেয়ারম্যানসহ ২০ জন এজাহারভুক্ত আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া অভয়নগরের পৃথক দুটি মামলায় একই দিন ১০৫ জন আদালতে আত্মসমর্পন করেন।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে উল্লেখ হলেন, অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আনিছুর রহমান মিন্টু, সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাবের ছেলে শেখ কাফি সম্রাট, কমিশনার বিপুল শেখ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক কাজী মামুনসহ নেতৃবৃন্দ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এছাড়া একই দিন কেশবপুরের আরেকটি নাশকতার মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুর রহমান তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলা ও অভয়নগর উপজেলার আত্মসমর্পণকারী আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ কবীর হোসেন জনি বলেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে বাস্তবে কোনো মিল নেই। মনগড়া অভিযোগ দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের পক্ষে তারা জেলা জজ আদালতে জামিন ধরবেন। যা প্রক্রিয়াধীন।

এ বিষয়ে কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন বলেন, আদালতের নির্দেশে তারা আত্মসমর্পণকারী আসামিদের যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান।

এদিকে আদালত থেকে কারাগারের নেওয়ার জন্য তাদের ভ্যানে উঠানোর সময় আদালত চত্বরে স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। এসময় আদালত চত্বরে উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তবে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আদালত চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও পাবলিক প্রসিকিউটর সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, আমরাও অনেক মামলার আসামি হয়েছিলাম, আত্মসমর্পণ করেছি। কিন্তু আদালত চত্বরে এ ধরণের ঔদ্ধত্য আচরণ ও আদালতের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ড করিনি। বিষয়টি নিয়ে আমরা কোর্টে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো।

মিলন রহমান/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।