স্বামীর মৃত্যুর পর চায়ের দোকান করে ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা
সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান স্বামী। এরপরই মিনা বেগমের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন। পরে উপায় না পেয়ে শুরু করেন চায়ের দোকান। এই দোকানেই ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। হরেক রকমের চা বানিয়ে বেশ নাম কুড়িয়েছেন। বেড়েছে আয়ও।
মিনা বেগমের চায়ের দোকান মানিকগঞ্জে। তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘পুদিনা পাতা টি স্টল’। তবে এটি মিনু খালার চায়ের দোকান নামেই বেশি পরিচিত।
জানা যায়, ২০১০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর মানিকগঞ্জ শহরের পাশে বেউথা এলাকায় ছোট একটি চায়ের দোকান দেন মিনা। দিনে দিনে বড় হতে থাকে তার দোকানটি। শুধু দুধ আর রং চা দিয়ে শুরু করলেও এখন মিনা বেগমের দোকানে ২৮ রকমের চা পাওয়া যায়।
যার স্বাদ নিতে বিকেল থেকেই ভিড় জমায় জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ। তবে মিনা বেগমের চায়ের দোকানে কলেজপড়ুয়া ক্রেতার সংখ্যাই বেশি। এই দোকানে সবচেয়ে জনপ্রিয় চা হচ্ছে তেঁতুল চা, মাল্টা চা ও পুদিনা পাতা চা। চায়ের পাশাপাশি হাতে বানানো বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও হালিম পাওয়া যায় দোকানটিতে। সব মিলিয়ে মিনা বেগমের মাসিক আয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
দেবেন্দ্র কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র তামিম আহমেদ বলেন, আমাদের মানিকগঞ্জ শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় মিনা খালার চায়ের দোকান। পড়ন্ত বিকেলে এখানে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। আমার বিশ্বাস মানিকগঞ্জে এমন মজাদার চায়ের দোকান আর নেই। আর এই দোকানেই গল্পের বই পড়তে পড়তে চা পান করা যায়। এখানে প্রায় শতাধিক গল্পের বই আছে।
মানিকগঞ্জ শহরের বাসিন্দা তাফসির বলেন, দোকানের পরিবেশ অনেক সুন্দর। শহরের পাশে হওয়ায় মাঝে মধ্যে এখানে আসি। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে মাল্টা চা। এটাই বেশি খাওয়া হয়।
সাইফুল ইসলাম বলেন, শহরের পাশে বেউথা এলাকায় চায়ের দোকানটি সময় কাটানোর সেরা একটি জায়গা। এখানে চায়ের সঙ্গে বই পড়া যায়। অবসর সময় এসে মাঝে মধ্যে মিনা খালার চায়ের স্বাদ নেই।
মিনা বেগম বলেন, আমার আগে বেউথা ব্রিজের পাশে ছোট একটি চায়ের দোকান ছিল। এখন এখানে প্রায় এক বিঘা জমিতে এই দোকান। বিকেল থেকেই আমার দোকানে মানুষ আসতে থাকে। জমজমাট থাকে রাত ১০টা পর্যন্ত। এই দোকান করেই আমার সংসার চলে। দোকানের আয় থেকেই দিয়েছি মেয়ের বিয়ে। মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মতো আয় করি এখানে থেকে। এখন পরিবার নিয়ে সুখেই আছি।
জেডএইচ/এএসএম