মা-বোনের মরদেহের পাশে বসে কাঁদছিল দুই বছরের শিশু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০২:৩৩ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
ফাইল ছবি

নেত্রকোনার পূর্বধলায় নিজ বাড়ি থেকে এক গৃহবধূ ও তার সাত বছরের মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশে বসে কাঁদছিল ওই গৃহবধূর দুই বছরের আরেক মেয়ে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চুরাটিয়া গ্রাম থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত রূপালী আক্তার ও রুবাইয়া তাবাসসুম ওই গ্রামের মো. মোস্তাকিনের স্ত্রী ও মেয়ে। মোস্তাকিন ময়মনসিংহের ভালুকায় ফায়ার সার্ভিসের সিপাহি হিসেবে কর্মরত। বর্তমানে তিনি প্রেষণে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ে রয়েছেন।

পুলিশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা রয়েছে, নিহত দুজনের শরীরে একাধিক স্থানে আগুনে পোড়া ও কালো দাগের চিহ্ন রয়েছে।

তবে রূপালীর বাবা আবদুর রশিদ বলেন, রূপালীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তাদের মৃত্যুর কথা জানালেও এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আট বছর আগে মোস্তাকিনের সঙ্গে একই উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের বারহা গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে রূপালী আক্তারের বিয়ে হয়। এ দম্পতির দুই মেয়ে। গত সোমবার রাতে রূপালী তার দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমাতে যান। মঙ্গলবার সকালে তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে পরিবারের লোকজন ঘরের গিয়ে দেখে রূপালী ও বড় মেয়ে রুবাইয়ার মরদেহ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় ছোট মেয়ে তাহমিনা পাশে বসে কাঁদছিল।

রূপালীর বাবা আবদুর রশিদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে তার মেয়ে ও নাতিকে হত্যা করা হয়েছে। সম্প্রতি মোস্তাকিন গ্রামে জমি কিনে তা থেকে একাংশ ছোট ভাইকে দেওয়ার পর দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মোস্তাকিন রূপালীকে মারধর করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে চার-পাঁচ দিন আগে রূপালী আবার শ্বশুরবাড়ি ফিরে যান।

তিনি বলেন, আমার মেয়ে ও নাতিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে এখন বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। রূপালীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। এ নিয়ে মামলা করবো।

তবে রূপালীর শাশুড়ি আমেনা খাতুনের দাবি, সকাল সাতটার দিকে (গতকাল) তিনি ঘুম থেকে উঠে রূপালী ও তার মেয়েদের দেখতে না পেয়ে তাদের ডাকতে যান। গিয়ে দেখেন রূপালী ও তার বড় মেয়ে খাটে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাদের পাশে ছোট মেয়েটা জীবিত রয়েছে। সে মায়ের মরদেহের পাশে বসে কাঁদছিল।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) লুৎফর রহমান বলেন, মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। রূপালীর ডান হাতে আগুনের পোড়া দাগ, দুই গোড়ালির ওপরে ও দুই কবজির ওপরে কালো দাগ রয়েছে। তার মেয়ের শরীরেও একই ধরনের দাগ পাওয়া গেছে। সিআইডি ও পূর্বধলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে থানায় এনে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এইচ এম কামাল/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।