টাঙ্গাইলে সরকারি হাসপাতালে মিলছে না জলাতঙ্কের টিকা
টাঙ্গাইলে হাসপাতালে মিলছে না সরকারিভাবে দেওয়া জলাতঙ্কের টিকা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। এই সুযোগে ফায়দা লুটছেন ওষুধ বিক্রেতারা।
রোববার এ চিত্র দেখা গেছে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ ক্লিনিক ভবনে স্থাপনকৃত টিকা বিতরণ কক্ষে। এখানে শিশু, নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী প্রায় দুই শতাধিক রোগী এসেছেন। কেউ কুকুর আবার কেউ বিড়ালের কামড় বা খামচির শিকার। কিন্তু বিনামূল্যের র্যাবিস ভ্যাকসিন না থাকায় হতাশ তারা।
এই সুযোগে ওই ভবন চত্বরেই ভ্যাকসিন বিক্রি করছেন কয়েকজন ওষুধ কোম্পানির কয়েকজন প্রতিনিধি। তারা র্যাবিস ভ্যাকসিন ও চারটি সিরিঞ্জ প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন ৫৫০ টাকায়। যদিও ভ্যাকসিনের গায়ে দাম লেখা ৫০০ টাকা, আর পাঁচ টাকা মূল্যের এক একটি সিরিঞ্জের দাম নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা।
ভুক্তভোগী ফাতেমা বলেন, ১১ ডিসেম্বর আমার দুই বছরের বাচ্চাকে বিড়াল খামচি দেয়। ১২ ডিসেম্বর এখান থেকে বিনামূল্যে প্রথম ডোজ দিয়েছি। এভাবে তিনটি ডোজ দেওয়ার তারিখ লিখে দেন নার্স। আজকে আমার বাচ্চার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার দিন। এসে শুনি ভ্যাকসিন নেই। বাধ্য হয়ে জনপ্রতি ১৩৫ টাকা ভাগ করে দিয়ে একটি ভ্যাকসিন কিনে আমরা চারজনের বাচ্চাকে দিয়েছি।
রুবী আক্তার নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, দুটি ডোজ বিনামূল্যে পেয়েছি। আজকে এসে শুনি ভ্যাকসিন নেই। তাই বাধ্য হয়ে এখানে থাকা এক ওষুধ বিক্রেতার কাছ থেকে কিনে বাচ্চাকে শেষ ভ্যাকসিনটি দিতে হলো। সরকারি ভ্যাকসিন হঠাৎ উধাও, নাকি বাড়তি সুবিধা নিতে দায়িত্বরতরা না থাকার অজুহাত সাজিয়েছেন।
এসব বিষয়ে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকারি ভ্যাকসিন শেষ হওয়ায় রোগীদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। তবে ভবনের বাইরে যিনি ভ্যাকসিন বিক্রি করছেন, তিনি আমাদের কেউ নন। তাকে এই ভবন চত্বরে ভ্যাকসিন বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়নি। দালাল আর বহিরাগত ওষুধ বিক্রেতাদের বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এর আগে কয়েক দফায় পুলিশের হাতে আটকও হয়েছেন তারা।
অপর দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রিজিয়া জানান, এ বছর রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ভ্যাকসিন সময়ের আগেই শেষ হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে ভ্যাকসিনের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত পেয়ে যাবো।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আলমগীর হোসেন বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় র্যাবিস ভ্যাকসিন বিতরণে সমস্যা হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে আমরা যে পরিমাণের চাহিদা দেই, সেই পরিমাণের ভ্যাকসিন আসে না। সরকারি ভ্যাকসিন এলেই এ সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের ভেতরে দালাল বা বাইরের ওষুধ বিক্রেতাদের বিক্রির সুযোগ নেই। এরপরও যদি কেউ বিক্রি করে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরিফ উর রহমান টগর/জেডএইচ/এমএস