ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবী সমিতি-নাগরিক কমিটির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠকসহ তিন নেতার ওপর হামলার অভিযোগে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আইনজীবী সমিতি এবং নাগরিক কমিটির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি হয়েছে। সকালে জেলা আইনজীবী সমিতি সংবাদ সম্মেলন করার পর দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এসময় আদালত এলাকায় দেখা দেয় উত্তেজনা।
এর আগে রোববার আইনজীবী ও তাদের সহযোগীদের পরিকল্পিত হামলার শিকার হন বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ।
আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সালিশ সভায় বাদী-বিবাদী পক্ষের মধ্যে হওয়া মারামারির সময় জাতীয় কমিটির এক নেতা আহত হন।
আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইউনুছ সরকার বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য বিএম ফরহাদ হোসেনের ঘনিষ্ঠ আসাদুজ্জামান খোকনকে সোমবার জামিন করান। চট্টগ্রাম আদালতে করা মামলার উপনথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এনে বিচারককে চাপ প্রয়োগ করে জামিন করিয়েছেন, যা নজিরবিহীন ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, এরপর কসবার একটি পারিবারিক সালিশের জন্য বাদী পক্ষের হয়ে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে যান। সেখানে সালিশ হওয়া না হওয়া নিয়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষের মধ্যে হওয়া মারামারিতে টেবিলের গ্লাসে লেগে পড়ে গিয়ে আহত হন একজন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুকে লাইভ করে অপপ্রচার চালানো হয়। পরে তাদের পক্ষ নিয়ে কয়েকজন এসে মফিজুর রহমান বাবুলের কক্ষে ভাঙচুর চালান।
তবে মফিজুর রহমান বাবুল কোনো পক্ষেরই আইনজীবী নন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এদিকে দুপুরে পৌর এলাকার কাউতলীর সড়ক ভবনের সামনে থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এই মিছিল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শেষ হয়।
সেখানে তারা মফিজুর রহমান বাবুলকে জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক উল্লেখ করে তাকে গ্রেফতারে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ তাদের সেখানে বাধা দেয়। একপর্যায়ে মিছিল নিয়ে ফেরার পথে সার্কিট হাউজের ভেতরের রাস্তা দিয়ে তারা আবার আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এখানেও পুলিশের বাধার মুখে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মফিজুর রহমান বাবুলকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, আদালত এলাকায় এমনিতেই পুলিশ থাকে। এখানে বিক্ষোভ কিংবা অন্য কিছু করার সুযোগ নেই। বিক্ষোভকারীদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সার্বিক পরিস্থিতিতে পুলিশ সতর্ক আছে। মারামারির ঘটনায় অভিযোগ দিলে সে বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/জেডএইচ/জেআইএম